৪ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর দেখভালে ১৪ কর্মকর্তা, সেবা পেতে ভোগান্তি
- শিহাব উদ্দিন
- প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৪ PM , আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৪ PM

দেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজে কর্মরত চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের কাজ করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ইএমআইএস) সেল। বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারী নিয়ে কাজ করা এ উইংয়ের দেখভাল করেন মাত্র ১৪ জন। জনবল সংকটের কারণে একদিকে বেতন ছাড় করতে যেমন বিলম্ব হয়; অন্যদিকে যথাযথ সেবা থেকে বঞ্চিত হন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের।
মাউশি জানিয়েছে, ইএমআইএস সেলের কার্যক্রম গতিশীল করতে একাধিক সভা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সভার আলোচনা অনুযায়ী শিগগিরই কিছু উদ্যোগ নেওয়া হবে। জনবল সংকটের বিষয়টি সরকারকে অবহিত করা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সারা দেশে ২২ হাজারের বেশি বেসরকারি স্কুল-কলেজ এবং এখানে কর্মরত প্রায় চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা প্রদানের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো থেকে শুরু করে নতুন শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি, ইনডেক্স ট্রান্সফারের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয় ইএমআইএস সেলকে। একই সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রী, পাঠ্যক্রম, শিক্ষা উপকরণ, শ্রেণী কক্ষ, অবকাঠামো ইত্যাদি নিয়েও কাজ করে মাউশির এ শাখাটি।
এ বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ইএমআইএস সেলের কার্যক্রম গতিশীল করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সভাও করেছি। তবে সব সমস্যা এখনি সমাধান করা সম্ভব নয়। ধাপে ধাপে বিষয়গুলো সমাধান করা হবে।’
জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সারা দেশে ২২ হাজারের বেশি বেসরকারি স্কুল-কলেজ এবং এখানে কর্মরত প্রায় চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা প্রদানের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো থেকে শুরু করে নতুন শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি, ইনডেক্স ট্রান্সফারের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয় ইএমআইএস সেলকে। একই সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রী, পাঠ্যক্রম, শিক্ষা উপকরণ, শ্রেণী কক্ষ, অবকাঠামো ইত্যাদি নিয়েও কাজ করে মাউশির এ শাখাটি।
মাউশির ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ইএমআইএস সেলে ১৪ জন কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে একজন সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট, চারজন প্রোগ্রামার, একজন করে মেইনটেনেন্স ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষা পরিসংখ্যানবিদ, পাঁচজন সহকারী প্রোগ্রামার, সিনিয়র কম্পিউটার অপারেটর একজন এবং সহকারী মেইনটেনেন্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে একজন করে কর্মরত রয়েছেন।
ইএমআইএস সেল জানিয়েছে, বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ছাড়াও সরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের নানা কাজ করতে হয় তাদের। এত কাজের চাপে নুয়ে পড়ার মতো অবস্থা তাদের। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চান তারা। জনবল বৃদ্ধির দাবি তাদের।
এ বিষয়ে ইএমআইএস সেলের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট খন্দকার আজিজুর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের যে জনবল রয়েছে, এটি দ্বিগুণ করতে হবে। তাহলে আমরা আরও দ্রুততার সঙ্গে কাজ করতে পারবো।’
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে ইএমআইএস সেলের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘সরকারের অন্যান্য সংস্থার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি কাজ করতে হয় তাদের। চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য ১৪ জন কাজ করে। ১৪ জনই বেতনের কাজ করেন না। প্রতি মাসে এতগুলো তথ্য দেখা কষ্টসাধ্য বিষয়। অনেক সময় আমাদের ছুটির দিনেও গভীররাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়। আশা করছি সরকার এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবে।’
আরো পড়ুন: ঢাবির দুই ইউনিটের পূর্ণ ও একটির আংশিক বিষয় বরাদ্দ প্রকাশ
ইএমআইএস সেল সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি স্কুল-কলেজ ছাড়াও দেশের সকল সরকারি কলেজ ও বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের পিডিএস আপডেট ও সংরক্ষণ, গ্রেডেশন করা, বদলি-পদায়নসহ যাবতীয় কাজ অনলাইনে সম্পন্ন হয় যা ইএমআইএস এর এইচআরএম সিস্টেমের মাধ্যমে । সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত শিক্ষকদের পিডিএস আপডেট ও সংরক্ষণের কাজও করে এ উইংটি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রয়োজনে নতুন নতুন সফটওয়ার প্রস্তুতকরণ এবং চলমান সফটওয়ারগুলোর বিভিন্ন পরিবর্তন-পরিমার্জন ও রক্ষণাবেক্ষণ এর কাজ ইএমআইএস সেলকে করতে হয়। মাউশির ডাটা সেন্টার ইএমআইএস সেলের ইঞ্জিনিয়ারদের দ্বারা রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করা হয়।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কম্পিউটারে নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিভিন্ন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের রক্ষণাবেক্ষণ, আইটি সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, আইএমএস -এর তথ্য হালনাগাদ ও শুদ্ধিকরণে মাঠ পর্যায়ে মাধ্যমিক স্তরের সকল কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ইএমআইএস সেলের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। এ কাজগুলো সম্পন্ন করতে আরও জনবল দরকার। জনবল না হলে যথাযথ সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।