বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য ঢাবির হলগুলোতে, বাড়ছে চুরি

নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের

  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোয় চুরির ঘটনা নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। প্রায় প্রতিটি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের এ ধরণের ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অনেকের পোশাক, জুতা থেকে শুরু করে মোবাইল-ল্যাপটপ, সাইকেল এমনকি বইও চুরির ঘটনা ঘটেছে। ফলে হলগুলোর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।

সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল থেকে একই দিনে দু‘জন চোরকে আটক করে শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাগজপত্র জালিয়াতি করে হলেই থাকতেন। অপরজন বাইরে থেকে এসে নানা সামগ্রী চুরি করে নিয়ে যেতেন বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।

তারা জানিয়েছেন, মাস্টার দা সূর্যসেন হলে এক চোরকে আটক করা হয়। এসময় তার নিকট থেকে বেশ কিছু লুঙ্গি উদ্ধার করে হলের শিক্ষার্থীরা। পরে তাকে মারধর করে ছেড়ে দেয়া হয়।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দেয়া একজনকেও আটক করে শিক্ষার্থীরা। তিনি রাজধানীর মিরপুরের সরকারী বাঙলা কলেজে পড়াশুনা করেন বলে জানা গেছে। তার নিকট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভুয়া কাগজপত্র পাওয়ায় এবং চুরির কথা স্বীকার করায় শাহবাগ থানা পুলিশে দেয়া হয়।

জানা গেছে, বাঙলা কলেজের ওই ছাত্রকে কয়েকমাস আগে জুহুরুল হক হল থেকে চুরির অভিযোগে পুলিশে দেয়া হয়েছিল। কারোর সঙ্গে যোগাযোগ করে হলে উঠার পর থেকে মোবাইলসহ বিভিন্ন জিনিস চুরি করত সে। বাঙলা কলেজে পড়লেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টটিং এ পড়ে বলে পরিচয় দিত।

বিষয়টি জানার পর সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থীরা তার বিষয়ে খোঁজ নেয়া শুরু করেন। পরে তাকে তাকে ধরতে সক্ষম হন। তার নিকট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি কার্ড, একাউন্টিং উইকের কুপনসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র পাওয়া যায়য়। পরে তাকে হল প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শাহবাগ থানায় দেয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, আটক রাকিবুল ইসলাম রাকিব সুকৌশলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ও সূর্যসেন হল পরিবার গ্রুপে এড ছিল। হল গ্রুপে তার প্রয়োজনে পোস্ট করত।

সূর্যসেন হলের আবাসিক ছাত্র তাওহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হলে চুরি করতে পারবে দুই শ্রেণির লোক। হয় স্টুডেন্টদের বেশ ধরতে হবে, না হয় স্টাফদের। এখন প্রতিরোধ না করে প্রতিবাদ করলেতো হবেনা। আমাদের হলে কয়টা সিসিটিভি ক্যামেরা আছে? শুধু নিচ তলায় থাকলে কেমনে হবে? কঠোর নিরাপত্তা এবং নজরদারি করলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আশরাফ বলেন, ‘এসব নৈতিক অবক্ষয়ের লক্ষণ। একটা ছাত্র কীভাবে চুরি করতে পারে? তবে চোর চুরি করবে এটা স্বাভাবিক। হলে চুরি করার পেছনে নজরদারি এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থার কমতিকে আমি দায়ী করি অনেকাংশে।’

এ ব্যাপারে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রাব্বানিকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।


সর্বশেষ সংবাদ