‘এই সেই অমানুষ’ বলেই রুবেলকে জুতাপেটা করলেন ঢাবি ছাত্রী

ঢাবি ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজন
ঢাবি ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজন

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কক্ষে কালো বোরকা পরে মায়ের সঙ্গে ঢোকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রী। এরপর সেখানে হাজির করা হয় অপহরণে জড়িত শাকিল আহমেদ রুবেলকে। ঘটনার দিনের খয়েরি রঙের জামা ছিল তার পরনে। রুবেলকে দেখেই ওই ছাত্রী চেঁচিয়ে বললেন, ‘মা, এই সেই লোক। এই সেই অমানুষটা।’ খানিকটা নীরব থেকে হঠাৎ তেড়ে যান তিনি। স্যান্ডেল খুলে রুবেলকে কিছুক্ষণ মারার পর আবার চেয়ারে বসেন।

তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীকে কল্যাণপুর থেকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনিই সেই ব্যক্তি কিনা, তা নিশ্চিত হতে ডাকা হয় ভুক্তভোগীকে। সেটা করতে গিয়ে তাকে প্রথম শাস্তি দিলেন ওই ছাত্রী।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ওই ছাত্রীর বোনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে পড়ছেন। বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হয়েছেন। বাবা আগেই মারা গেছেন। দুই বোনকে মা মানুষ করছেন একা। মায়ের স্বপ্ন- ছোট মেয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আর বড় মেয়ে প্রশাসন ক্যাডার হবে। তবে পুলিশ পরিচয়ে অপহরণের পর তারা ভাবছিলেন, পুলিশ কেন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত শেষে তাদের ভুল ভেঙে গেছে।

রোববার মিন্টো রোডে সংবাদ সম্মেলনে ডিবির প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, রুবেলের নামে এ পর্যন্ত ছয়টি মামলার তথ্য মিলেছে। ১০ বছরে দেড় হাজারের মতো ছিনতাই করেছেন। অর্ধশতাধিক মেয়েকে অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছেন। ছিনতাইয়ের জন্য স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের অপহরণ ও অশালীন আচরণ ছিল রুবেলের কৌশল।

আরো পড়ুন: গভীর রাতে একসঙ্গে প্রাণ হারালেন পাঁচজন

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, ওই ছাত্রীকেও পুলিশ পরিচয় দিয়েছিলেন রুবেল। কোমরে পিস্তল ও হাতে ছিল ওয়াকিটকি। কয়েক দিন আগে বরিশালে আরেক মেয়েকে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। ঢাবি ছাত্রীর ব্যাগে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র ছিল। সেটি উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্রটিও জব্দ করা হয়েছে। রুবেলকে সহযোগিতার গ্রেপ্তার অপর তিনজন হলেন আকাশ শেখ (২২), দেলোয়ার হোসেন (৫৫) ও হাবিবুর রহমান (৩৫)।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, রুবেলের তিনটি বিয়ের তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল জানান, ফরিদপুরে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের চক্রের সঙ্গে তিনি কাজ করেছেন। নেশাজাতীয় ট্যাবলেট খাইয়ে চালকদের হত্যার পর রিকশা ছিনতাই করে গ্রুপটি। একটি মামলায় সম্প্রতি কারাগার থেকে বের হন রুবেল। যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে অপহরণ করেছেন তিনি, সেটি গত ১২ আগস্ট ছিনতাই করেন।

পুলিশ বলছে, রাস্তায় কেউ এসে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ধরে নিতে চাইলে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। পুলিশ এভাবে ধরে না। তাকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে। প্রয়োজনে আশপাশের লোক জড়ো করে বিষয়টি জানাতে হবে। গত ২৫ আগস্ট পুলিশ পরিচয়ে ঢাবির ওই ছাত্রীকে রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে তুলে তুরাগ থানার দিয়াবাড়ী এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে স্বর্ণের চেইন, কানের দুলসহ ব্যাগ ছিনিয়ে নেন রুবেল।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence