সিগারেট খাওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডা, বন্ধুর ছুরিতেই খুন হয় অন্তর

নিহত অন্তর
নিহত অন্তর  © সংগৃহীত

শবে বরাতের দিনে সিগারেট খাওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডা চলাকালে বন্ধুদের ছুরির আঘাতেই খুন হয়েছে কিশোর অন্তর (১৫)।  রাজধানীর সূত্রাপুর থানার ফরাশগঞ্জ ঘাটে এই ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, সোমবার (২৯ মার্চ) শবে বরাতের রাতে বন্ধুরাই ফোন করে ডেকে নিয়ে যায় কিশোর অন্তরকে। এসময় পাশাপাশি বসে সিগারেট খাওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয় তাদের। একপর্যায়ে কিশোর অন্তরের পেটে ছুরি চালায় কয়েকজন।

এরপর রাত সাড়ে ১১টায় গুরুতর আহত অবস্থায় অন্তরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই অন্তর মারা গেছে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক।

অন্তরের মৃত্যুর খবরে ছুটে আসেন পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। তাদের আহাজারিতে কেঁপে ওঠে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ।

নিহতের ভাই আফসার হোসেন বলেন, ওর (অন্তর) বন্ধুরা খুবই ডিস্টার্ব করত। এখানে একটা স্কুলে ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়েছে অন্তর। কিন্তু বন্ধুদের কারণে ওর পড়াশোনায় মনোযোগ ছিল না। বাধ্য হয়ে গত বছর গাজীপুরের জাঝর রাহিমা বিশ্বাস একাডেমিতে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করে দেই। কিন্তু করোনার কারণে ক্লাস না থাকায় বাসাতেই থাকত অন্তর।

তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার) বিকেল তিনটা-সাড়ে ৩টার দিকে ওর মোবাইলে একটা কল আসে। এরপর তড়িঘড়ি করে বাসা থেকে বের হয় অন্তর। বের হওয়ার সময় মায়ের কাছ থেকে ১০০ টাকাও নেয় সে।

কান্না জড়িত কণ্ঠে আফসার বলেন, রাত ১০টা পর্যন্ত ওর কোনো খবর পাইনি। হঠাৎ ফোনে খবর পাই কারা যেন আমার ভাইয়ের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে মেরে ফেলেছে।

নিহত অন্তরের এক বান্ধবী বলেন, গতকাল সন্ধ্যার আগে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে অন্তর। তখন ওর সঙ্গে ছিল প্রিন্স নামের এক বন্ধু। আমার সঙ্গে দেখা করে চলে যায়। কী কারণে কারা তাকে খুন করল বুঝতে পারছি না।

অন্তরের মা নিলুফা হোসেন বলেন, আমার ছেলে বাসা থেকে বের হতো না। কেন গতকাল বের হলো বুঝতে পারলাম না। আমার ছেলেকে কারা হত্যা করল, কী জন্য হত্যা করল জানি না। আমার ছেলে তো কোনো খারাপ কাজের সঙ্গে জড়িত না।

যোগাযোগ করা হলে সূত্রাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) স্নেহাশিষ রায় বলেন, সিগারেট খাওয়া নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে ফেরদৌস, সাজ্জাদ ও প্রান্তসহ কয়েকজন অন্তরের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। পরে তাকে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় সাজ্জাদ, প্রান্ত ও ফেরদৌস নামের তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার অধিকতর তদন্ত চলছে। ঘটনার পেছনে ঠিক কী কারণ এবং আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

 


সর্বশেষ সংবাদ