কোটা আন্দোলনে সহিসংতা: ১২ দিনে ২৫৩ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তারের তথ্য

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন  © ফাইল ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদেরও। রোববার পর্যন্ত ১২ দিনে ঢাকাসহ ১৮টি জেলায় অন্তত ২৫৩ জন শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার হয়েছেন। পুলিশ, কারা কর্তৃপক্ষ ও গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানিয়েছে দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম।

এ বিষয়ে পুলিশের ভাষ্য, সহিংসতায় জড়িত প্রকৃত আসামিদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। খবরে বলা হয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ১২৬, কুষ্টিয়ায় ২০, সিলেটে ১৬, রাজশাহীতে ১০, মাগুরায় ৬, সাতক্ষীরায় ৫, বগুড়ায় ৮, মাদারীপুরে ১৫, মৌলভীবাজারে ২, জামালপুরে ৪, ঢাকা জেলায় ৬, নওগাঁয় ৪, সুনামগঞ্জে ২, ফরিদপুরে ৩, জয়পুরহাটে ৪, নীলফামারীতে ৩, চুয়াডাঙ্গায় ১ ও নারায়ণগঞ্জে ২ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জানা গেছে, গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯ জন ছাত্রশিবির এবং ৮ জন ছাত্রদলের নেতা-কর্মী। কমপক্ষে ১৬টি মামলায় শিক্ষার্থীদের আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ শিক্ষার্থীর নাম ও বিভাগের কথা উল্লেখ আছে।

এ ছাড়া রূপনগর থানায় পৃথক দুটি মামলায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিইউবিটির শিক্ষার্থীসহ এক হাজার থেকে দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। আশুলিয়া থানার মামলায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীরা আসামি। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিকে ঘিরে শাহবাগ থানায় ১১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামিরা অজ্ঞাত। এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতজন সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে রয়েছেন।

প্রথম আলো পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, বিভিন্ন মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় ১৬ থেকে ২৭ জুলাই অন্তত ১২৬ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার হয়েছেন। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, কোনও শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়নি। শুধু প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরপরও কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া না গেলে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হবে।

বিভিন্ন মামলায় ঢাকা মহানগর থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ১৬ ছাত্র  কারাগারে আছেন। জানা গেছে, এর মধ্যে অন্তত ছয়জন উচ্চ মাধ্যমিকের। ঢাকা মহানগরের বাইরে ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে ঢাকা জেলা পুলিশ সূত্র। সিলেটের জালালাবাদ থানায় দুই মামলায় ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন মাধ্যমিক স্তরের।

আরো পড়ুন: কোটা আন্দোলনে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষতি ৩২ কোটি টাকা

জালালাবাদ থানার এসআই মো. লোকমান হোসেন বলেন, আসামিদের মধ্যে শিক্ষার্থী থাকার তথ্য থাকলেও কেউ শিক্ষার্থীর সনদ কিংবা পরিচয়পত্র দেখাননি। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে।

গত ১৮ জুলাই মাগুরা-যশোর মহাসড়কে শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৯ জুলাই সদর থানায় এসআই শিমুল হালদার মামলা করলে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আরও এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরাও অংশ নিয়েছিলেন। তাদের সরে যেতে বললে পুলিশের ওপর হামলা করে। সবাইকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নীলফামারী সদর থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার ১৬ জনের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। সদর থানার ওসি মো. তানভিরুল ইসলাম বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিক্ষার্থী হিসেবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে দাবি তার।


সর্বশেষ সংবাদ