চাকরির পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় নিখোঁজ, টেকনাফে মিলল লাশ

  © সংগৃহীত

চাকরি একটি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন নজরুল ইসলাম নয়ন (২৭) নামের এক যুবক। নিখোঁজের ছয়দিন পর কক্সবাজারের টেকনাফের গহীন পাহাড় থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে টেকনাফ থানা পুলিশ। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে তার পরিচয় মেলে।

গতকাল রবিবার (২ জুলাই) কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর মরদেহটি স্বজনদের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। পরে টেকনাফ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের খালু আব্দুস সাত্তার মিয়া।

নিহত নজরুল ইসলাম নয়ন শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ভোজেস্বর ইউনিয়নের নরকলিকর্তা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বেপারীর ছেলে। তিনি শরীয়তপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর জেড এইচ সিকদার ইউনিভার্সিটি থেকে বিএসসি সম্পন্ন করেছিল।

জানা যায়, গত ২৫ জুন ঢাকায় সরকারি বিটিসিএলে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বাবাকে ফোন করে বলেন আমি বাড়িতে রওনা করলাম। তার আধাঘণ্টা পর থেকেই তার মোবাইল নম্বর বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে তাকে কোথায় খোঁজে না পাওয়ায় তার খালু সাত্তার মিরপুর থানায় একটি মিসিং ডায়েরি করেছেন। তার সাতদিন পর ১ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টেকনাফে পাহাড় থেকে একটি মরদেহ উদ্ধারের খবর শোনা যায়। এরপর নড়িয়া থানা থেকে খবর আসে মরদেহটি নয়নের।

পরে রবিবার সাত্তার মিয়াসহ নিহতের স্বজন টেকনাফ থানায় যান। পরে সাত্তার মিয়া একটি হত্যা মামলা করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহটি শরীয়তপুর নিয়ে আসেন। আজ সোমবার (৩ জুলাই) সকালে মরদেহটি শরীয়তপুরের নিড়িয়া উপজেলার নর কলিকার্তা গ্রামের নিজ বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নিহতের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে অনেক সহজ সরল ছিল। পড়ালেখা শেষ করে একটা চাকরির পরীক্ষা দিতে ঢাকায় ওর খালুর বাড়িতে গিয়েছিল। চাকরির পরীক্ষা শেষে আমাকে ফোন করে বলেছে বাবা আমি গাড়ি উঠতেছি। কিন্তু তারপর থেকে নয়নের নম্বরটি বন্ধ ছিল। তাকে না পেয়ে মিরপুর থানায় ওর খালু জিডি করেছে। আমার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হতে পারলো না। আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, কেরুনতলি এলাকার পশ্চিম পাহাড় থেকে মরদেহটি উদ্ধারের পর আমরা নিহত যুবকের হাতের আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে জানকে পারি সে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ভোজেস্বর ইউনিয়নের বাসিন্দা। পরে মরদেহটি সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠাই। নিহতের স্বজনদের খবর দেওয়া হলে তার খালু এসে একটি হত্যা মামলা করেন। তারপর ময়নাতদন্ত শেষে তাদের মরদেহটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আসামি শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ