‘ঘুষের রেট নির্ধারণ’ নিয়ে সভা, ফেসবুকে ভাইরাল
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫০ PM , আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫০ PM

শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির ‘ঘুষের রেট নির্ধারণ’ করা-সংক্রান্ত সভার রেজল্যুশনের অংশ বিশেষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে ঘুষের পরিমাণ সহনীয় পর্যায় নামিয়ে আনা এবং হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম কাশেম।
গত ৬ মার্চ শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত ভাইরাল হওয়া রেজল্যুশনে দেখা যায়, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী সভা ৬ মার্চ বেলা ২টায় শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে অ্যাড. সুলতান হোসেন মিয়া সভাকক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়
সভায় সভাপতিত্ব করেন নির্বাচিত নির্বাহী কমিটির সভাপতি অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম কাশেম এবং সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মুহাম্মদ কামরুল হাসান।
সভার শুরুতে অ্যাজেন্ডাভিত্তিক আলোচনায় সকলে সদস্য অংশগ্রহণ করেন এবং নিম্ন বর্ণিত সিদ্ধান্তসমূহ সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
সিদ্ধান্ত নম্বর-২: পেশকার/পিয়নকে সিআর (নালিশি) ফাইলিংয়ে ১০০ টাকার বেশি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সিদ্ধান্ত নম্বর-৩: যেকোনো দরখাস্তে জিআর/সিআর ১০০ টাকার বেশি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সিদ্ধান্ত নম্বর-৪: জামিননামা দাখিলের খরচ মামলা প্রতি ১০০ টাকার নিচে না এবং ২০০ টাকার বেশি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সিদ্ধান্ত নম্বর-৫: গারদখানায় ওকালতনামায় স্বাক্ষরে ১০০ টাকা, সিভিল ফাইলিংয়ে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা ও হলফনামায় ১০০ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
আর কোনো আলোচনা না থাকায় সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে সভাপতি সভার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
এই রেজল্যুশনের অংশ বিশেষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। নাগরিক সমাজ এটাকে ঘুষকে অফিশিয়ালি বৈধতা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন। অথচ এই ঘুষ দেওয়া-নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই।
শাহিন আলম নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী তাঁর আইডিতে শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সভায় পাস হওয়া ওই রেজল্যুশনের অংশবিশেষ পোস্ট করে লিখেন, ‘অনিয়ম যখন দীর্ঘদিন ধরে চলে, তখন সেটা আইন হয়ে যায়। সেটার প্রমাণ এই মিটিংয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো। আমাদের সমাজ আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে?’
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম কাশেম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শরীয়তপুর কোর্ট কাচারিতে দীর্ঘদিন যাবৎ ঘুষ নেওয়ার রেওয়াজ চলে আসছে। কোর্টের কর্মচারীরা ইচ্ছামতো যার থেকে যা পারছে আদায় করে নিচ্ছে। আমরা চাচ্ছি এটা বন্ধ হোক। যেহেতু এটা একবারে হুট করে বন্ধ করা যাবে না, তাই সভায় ঘুষের পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে নির্দিষ্ট আকারে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যাতে আমরা কেউ হয়রানির শিকার না হই। ভবিষ্যতে আমরা এই অনৈতিক লেনদেন পুরোপুরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেব।’