৭৫ আসন ফাঁকা রেখেই ভর্তি শেষ বশেমুরবিপ্রবির, সুযোগ চান অপেক্ষমাণরা

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ৭৫ আসন ফাঁকা রেখেই ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) প্রশাসন। তবে ফাঁকা আসনের বিপরীতে গণবিজ্ঞপ্তির দাবি জানিয়ে উপাচার্য বরাবর আবেদন করেছেন ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২২ জানুয়ারী) বিকেলে উপাচার্য বরাবর অপেক্ষায় থাকা সাতজন শিক্ষার্থী এ আবেদন করেন।

শিক্ষার্থীরা আবেদনে উল্লেখ বলেন, ‘আমরা গুচ্ছ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি, কিন্তু অপেক্ষমান তালিকায় থাকায় ভর্তির সুযোগ পাচ্ছি না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাঁকা আসনে ভর্তি হতে ইচ্ছুক। গোপালগঞ্জ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক আসন  ফাঁকা থাকার পরেও কোনো বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছে না, যার ফলে আমরা ভর্তিইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সাথে  চরম বৈষম্য করা হচ্ছে।’

জিএসটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ১২ জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের ফাঁকা আসন পূরণ করবে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে। কিন্তু ২১ জানুয়ারি পার হয়ে গেলেও গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছে না। এ অবস্থায় ভিসির কাছে তাদের অনুরোধ, যাতে তাদের কথা বিবেচনা করে ২০২৩-২৪ গুচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাঁকা আসন গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পূরণ করার মাধ্যমে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নের সুযোগ করে দেন।

ভর্তি কমিটি থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এখনও বিভিন্ন বিভাগে ৭৫টি আসন ফাঁকা রয়েছে। তবে গত ১৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আর ভর্তি না নেওয়ার।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সব আসনে ভর্তি নেওয়ার পর অনেকেই ভর্তি বাতিল কারলে আসনগুলো ফাঁকা হয়। এবারের গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া সমাপ্তি হতে অনেক সময় লেগে যাওয়ায় ইতিমধ্যে বেশ কিছু বিভাগ প্রথম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের মিডটার্ম পরীক্ষা নিয়ে নিয়েছে। ফলে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সমস্যা। এ জন্য অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

আসন ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে ভর্তি নেওয়ার দাবি জানিয়ে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা শিক্ষার্থী শাহীন বলেন, ‘ফাঁকা আসন থাকতেও কেন দেবে না গণবিজ্ঞপ্তি? এটা তো অন্যায়। সব বিশ্ববিদ্যালয় তো দিয়েছে। আমারা যারা সেকেন্ড টাইমার ছিলাম, একটা সিট আমদের অনেক কিছু। একটু বিবেচনা করে দেখার অনুরোধ। সবাই তো দিয়েছে, তাহলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কী সমস্যা? গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ফাঁকা আসনে ভর্তি নেওয়ার দাবি জানাই।’

ভর্তি-ইচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি ২৩-২৪ গুচ্ছে অংশগ্রহণ করা একজন শিক্ষার্থী। জিএসটি থেকে ছয়টি মেরিট দিছে। তারপরও পর্যাপ্ত সংখ্যক আসন শূন্য থাকায় ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আবেদনের পেক্ষিতে জিএসটি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের নিজস্ব উদ্যাগে ১২ জানুয়ারি থেকে শূন্য আসন পূরণের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা বলে। ইতোমধ্যে জিএসটির সব বিশ্ববিদ্যালয় গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের শূণ্য আসন পূরণ করেছে।’

আরো পড়ুন: দৃশ্যমান হচ্ছে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস

বশেমুরবিপ্রবিতে পর্যাপ্ত আসন ফাঁকা থাকার পরেও ২০২৩-২৪ গুচ্ছের ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ অবস্থায় আমরা যারা কাছাকাছি অপেক্ষমাণ তালিকায় আছি, তারা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছি না, যা আমাদের সাথে চরম বৈষম্য এবং অবিচার। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আমাদের কথা বিবেচনা করে ফাঁকা আসনে আমাদের ভর্তি নিশ্চিত করতে দাবি জানাচ্ছি। সেকেন্ড টাইমার হওয়ায় আমাদের আর পরীক্ষা দেওয়ার ও সুযোগ নেই। ফলে এখন চরম হতাশায় জীবন অতিবাহিত হচ্ছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, ‘ভর্তি কমিটি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে কিছু বিভাগে অনেক দিন ধরেই ক্লাস চলছে। কিছু বিভাগে মিডটার্ম পরীক্ষা হয়ে গেছে। ঈদ-উল-ফিতরের পর আমরা পরবর্তী সেশনের (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে চাই। তাই আমরা মনে করি, এই মূহুর্তে তাদের ভর্তি করা সমীচীন হবে না।’


সর্বশেষ সংবাদ