সুদানে স্কুল-হাসপাতাল-আবাসিক এলাকায় ড্রোন হামলা, ৪৩ শিশুসহ নিহত ৭৯
সুদানের দক্ষিণ কর্দোফান প্রদেশে প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) কর্তৃক পরিচালিত একটি ড্রোন হামলায় অন্তত ৭৯ জন নিহত হয়েছেন, এর মধ্য শিশু ছিল ৪৩ জন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৩৮ জন- এমনটিই জানিয়েছে সুদান কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
দক্ষিণ কর্দোফান রাজ্য সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পশ্চিম সুদানের কালোগি শহরে ঘটে যাওয়া এই হামলায় নিহতদের মধ্যে চারজনই ছিলেন নারী। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, ড্রোনটি থেকে একটি কিন্ডারগার্টেন, একটি হাসপাতাল এবং ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ হয়। তারা এই ঘটনাকে আরএসএফ–সমর্থিত সুদান পিপলস লিবারেশন মুভমেন্ট-নর্থ এর ‘জঘন্য অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে।
প্রথমদিকে সরকার জানায়, হামলায় ছয় শিশু ও এক শিক্ষকসহ আটজন নিহত হয়েছেন। পরে হতাহতের সংখ্যা হুড়মুড়িয়ে বাড়তে বাড়তে ৭৯ জনে পৌঁছায়। এই সহিংসতা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি, আরএসএফকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা এবং তাদের মিত্রদের এই ‘অমানবিক অপরাধের’ জন্য জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্কুলের বাথরুমে ছাত্রকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, আত্মহত্যার চেষ্টা
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। সংস্থাটি বলেছে, এটি শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ উদাহরণ। তারা আরও জানাইয়, ইউনিসেফ জানায়, নিহতদের মধ্যে ৫ থেকে ৭ বছর বয়সি ১০ জনেরও বেশি শিশু রয়েছে।
গত মাসে উত্তর ও দক্ষিণ কর্দোফানে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় ৪১ হাজারের বেশি মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ কর্দোফানের বহু অংশে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। যার ফলে লাখ লাখ মানুষ পালাতে বাধ্য হয়েছে। বর্তমানে দারফুর অঞ্চলের পাঁচটি রাজ্য আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান সেনাবাহিনী ও আরএসএফ-এর মধ্যে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৪০ হাজার মানুষ এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ।
সূত্র : আনাদোলুর