বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ জমজ শব্দ: রাবি ভিসি
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২২, ০৪:২২ PM , আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২২, ০৪:২২ PM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল সেনাবাহিনীর হাতে নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তবে এ মহান মানুষকে হত্যা করে তেমন আমরা উপকৃত হয়নি। তাঁকে হত্যা করা হলেও বাঙালি হৃদয় থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম ও কীর্তি মুছে যায়নি। কেননা এ আদর্শ কখন মুছে যাবার নয়। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ জমজ শব্দ। তাই বাংলাদেশ বুকে আজও বঙ্গবন্ধুর নাম উদ্ভাসিত।
সোমবার (১৫ আগস্ট) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রাবি উপাচার্য বলেন, শোষিতদের পক্ষে থাকায় বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর কারণ হয়েছিল। কেননা তিনি সর্বদা শোষণের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। ধর্ম, বর্ণ, জাতিগোষ্ঠীর ভেদাভেদ ভুলে এক অসাম্প্রদায়িক, আধুনিক ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
আরও পড়ুন: শোক দিবসে দিনব্যাপী ঢাকা কলেজের সাত কর্মসূচি
তিনি বলেন, কিন্তু বিপদগামী ও দেশদ্রোহীদের হাতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন এ মহান নেতা। তবে তার এ অসমাপ্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য সর্বদা কাজ করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। কাঙ্ক্ষিত এ দেশ গড়াতে সকলের সম্মিলিত সহায়তার মাধ্যমে শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করার আহ্বান জানান উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার এবং মূখ্য আলোচক হিসেবে ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক স্বদেশ রায়।
আলোচনাকালে স্বদেশ রায় বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন আধুনিক রাষ্ট্র বিনির্মানের কারিগর। কেননা, এই ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজদের দ্বারা নিজ দেশে যখন পদদলিত হচ্ছিল মানুষ। তখন রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য গড়ে উঠে রাজনৈতিক সংগঠন কংগ্রেস। তবে সেটাও যখন ধর্মের দ্বারা বৈষম্যে আবদ্ধ হয়ে পড়তে শুরু করল, তখন গড়ে উঠল মুসলিম লীগ।
স্বদেশ রায় বলেন, পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে সেই ধর্মকে কেন্দ্র করেই ভারত বিভক্ত হয়ে গড়ে উঠল ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্র। সেখানেও ধর্মীয় বৈষম্য যখন চরমে, তখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঘটল স্বাধীনতা বাংলাদেশের অভ্যুদয়।
তিনি আরও বলেন, যে দেশে সকল ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠির সমান অধিকার থাকে না, সেটা আধুনিক রাষ্ট্র হতে পারেনা। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন এ দেশে কোন ধরনের ধর্ম-বর্ণের বৈষম্য রাখে নি। বরং বাঙালি জাতিকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, একজন বাঙালি যতোদিন থাকবে, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ততোদিন থাকবে। এমনি এক অসাম্প্রদায়িক ও আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন এ মহান রাষ্ট্রনায়ক।
রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে সহ বিভিন্ন অনুষদ, হল ও বিভাগের অধিকর্তা, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় শোক দিবসকে কেন্দ্র করে ভোর থেকেই নানা কর্মসূচি পালন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। দিবসের শুরুতে পতাকা অর্ধনমিত করা, শোক র্যারি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া প্রার্থনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল, সন্ধ্যায় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ পার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।