ছাত্রলীগের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চবি ক্যাম্পাস

সংঘর্ষের সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়
সংঘর্ষের সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়  © টিডিসি ফটো

দুপুরের পর রাতে আবারো সংঘর্ষে জড়িয়েছে  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপ। এতে এখন পর্যন্ত ১০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষে জড়ানো গ্রুপ দুটি হলো- সিএফসি ও সিক্সটি নাইন। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) রাত ৮টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

এর আগে এদিন দুপুরে সংঘর্ষে জড়ায় সিক্সটি নাইন  ও বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১৮ জন আহত হয়। এসময় সংবাদ সংগ্রহের কাজে থাকা সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয় সিএফসি গ্রুপের কয়েকজন কর্মী। 

জানা গেছে, সিএফসি গ্রুপের কর্মী ২০২১-২২ সেশনের মোহাম্মদ ফাহিমকে স্টেশনে কুপিয়ে জখম করে। পরে রাকিব হোসেন নামে একজন কর্মী আমানত হলের গেইটে আসলে তাকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া।

সরেজমিনে দেখা যায়, সিএফসি শাহ আমানত হলের সামনে এবং সিক্সটি নাইনের নেতাকর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে অবস্থান নেয়। এসময় রাস্তার মাঝে টেবিল দিয়ে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে নেতাকর্মীরা।

মেডিকেল সূত্রে জানা যায়, রাতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জন চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ২ জনের অবস্থা বেশ গুরুতর। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে আহত আরও শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সহায়তা চাওয়া হয়েছে। আহতদের উদ্ধারে অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছে হাসপাতাল কর্তপক্ষ 

এর আগে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে দুপুরে প্রায় ২ ঘন্টা চলে সংঘর্ষ। উভয় গ্রুপ এর আগে বুধবার রাতে সংঘর্ষে জড়ায়। শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন ও বিজয়ের সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৫ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। চারজনকে গুরুতর অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 
 
সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পরে আমানত হলের এক ছাত্রকে মারধর করে শাহজালাল হলের কিছু  ছাত্ররা। এরপর থেকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ শুরু হয়৷ আমরা পরস্থিতি সামাল দিতে হলে প্রবেশের চেষ্টা করেছি। কিন্তু ছাত্রদের বাধার সম্মুখীন হয়ে প্রবেশ করতে পারিনি। 

সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি সিএফসির নেতা সাদাফ খান বলেন, সিক্সটি নাইনের অনুসারীরা আমাদের এক ছেলেকে কুপিয়ে জখম করে। তারা নেতৃত্ব শূন্য হওয়ায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘর্ষ লাগানোর জন্য আমাদের এক জুনিয়রকে মারধর করেছে। সেটা থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। 

জানতে চাইলে সিক্সটি নাইন পক্ষের নেতা ও সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাঈদুল ইসলাম সাঈদ বলেন, সিক্সটি নাইনের জুনিয়ররা আমাদের ২০১৮-১৯ সেশনের একজনের সাথে বেয়াদবি করার জেরে এ ঘটনা শুরু হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী হলের সাথে আমাদের ঝামেলা শেষ না হতেই এ ঘটনা ঘটেছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদার বলেন, শুরু থেকেই আমরা ঘটনাস্থলেই ছিলাম তবে পরিস্থিতির কারণে প্রথমে তাদের শান্ত করতে পারিনি। এখন দুই গ্রুপকেই হলে ঢুকিয়ে দিয়েছি। আমাদের অতিরিক্ত ৫৩ জন পুলিশ মোতায়েন আছে। দুপুরের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই তদন্ত কমিটির কাছে এই ঘটনাটিও হস্তান্তর করা হবে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। 


সর্বশেষ সংবাদ