বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা

পিএসসিতে বসেই দেখতে হবে গণিতের খাতা, সময় থাকবে ৫ দিন

সরকারি কর্ম কমিশন
সরকারি কর্ম কমিশন  © ফাইল ছবি

৪৫তম বিসিএসের গণিত বিষয়ের লিখিত পরীক্ষার খাতা সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) বসেই দেখতে হবে পরীক্ষকদের। এজন্য ৪ থেকে ৫ দিন সময় দেওয়া হবে। ১২০ জন পরীক্ষকের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গণতি পরীক্ষার খাতা পিএসসিতে বসেই পরীক্ষকদের দেখতে হবে। পাইলটিং আকারে ৪৫তম বিসিএসে এটি করা হবে। ফলাফল ভালো হলে পরবর্তীতে বিজ্ঞানের অন্যান্য বিষয়ও যুক্ত করা হবে। 

পিএসসির একটি সূত্র জানিয়েছে, বিসিএসের গণিত বিষয়ের লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করতে পরীক্ষকরা অধিক সময় নিয়ে থাকেন। খাতা দেখার নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও নানা অজুহাতে পরীক্ষকরা খাতা জমা দেন না। এজন্য গণিতের খাতা পিএসসিতে বসে দেখার পাইলট প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। ৪৫তম বিসিএসের গণিতের প্রায় ১২ হাজার খাতা ১২০ জন পরীক্ষককে দেওয়া হবে। তারা পিএসসিতে বসেই খাতা মূল্যায়ন করবেন।

ওই সূত্র আরও জানায়, ১২০ জন পরীক্ষকদের মধ্যে ৬ জন থাকবেন প্রধান পরীক্ষক। যে পরীক্ষক ১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দেখবেন, তিনি কেবল ওই প্রশ্নের উত্তররই দেখবেন। তাঁর পাশের জন ২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দেখবেন। এভাবে অন্যান্য পরীক্ষকরা খাতা মূল্যায়ন করবেন। প্রশ্নের উত্তর পরীক্ষকদের কাছে থাকবে। তবও কোনো সমস্যা দেখা দিলে প্রধান পরীক্ষকরা আলোচনা করে তা সমাধান করবেন।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে পিএসসি’র ক্যাডার শাখার এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিসিএসে জট তৈরি হয় মূলত লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের কারণে। পরীক্ষকদের খাতা মূল্যায়নে সময় বেধে দেওয়া হলেও তারা সময়মতো খাতা জমা দেন না। এর ফলে বিসিএসের কার্যক্রম শেষ করতে যে রোডম্যাপ তৈরি করা হয়, সে অনুযায়ী ফল প্রকাশ করা যায় না। এজন্য পিএসসিতেই খাতা দেখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, পরীক্ষকদের মধ্যে মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই খাতা দেখার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করেন। ৪১তম বিসিএসে ঢাবির এক শিক্ষক ৬ মাসে ৩০টি খাতা দেখেছিলেন। পরীক্ষকদের বার বার নির্দেশনা দেওয়ার পরও তারা খাতা দেখায় গাফিলতি করেন। এ বিষয়ে কঠোর না হওয়ায় একই ধরনের ভুল বারবার হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বলেন, বিসিএসের খাতা যারা দেখেন তারা সমাজে সম্মানীয় ব্যক্তি। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া যায় না। এছাড়া তারা পিএসসি’র অধীনে চাকরিও করেন না। যারা খাতা দেখায় অবহেলা করছেন তাদের পুনরায় খাতা দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করছি।

এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি থেকে ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়। যা চলে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। গত বছরের ১৯ মে ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৩ লাখ ৪৬ হাজার পরীক্ষার্থী আবেদন করলেও পরীক্ষায় অংশ নেন ২ লাখ ৬৮ হাজার ১১৯ জন। পরীক্ষা দেননি ৭৮ হাজার ৮০৩ জন। গত ৬ জুন ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এতে উত্তীর্ণ হয় ১২ হাজার ৭৮৯ জন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পর সবচেয়ে কম সময়ে এ ফল প্রকাশ করে পিএসসি। 

৪৫তম বিসিএসের মাধ্যমে মোট ২ হাজার ৩০৯ জন ক্যাডার নেওয়া হবে। নন-ক্যাডারে নেওয়া হবে ১ হাজার ২২ জনকে। ৪৫তম বিসিএসে ২ হাজার ৩০৯ ক্যাডারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিয়োগ হবে চিকিৎসায়। সহকারী ও ডেন্টাল সার্জন মিলিয়ে ৫৩৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। চিকিৎসার পর সবচেয়ে বেশি শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগ পাবেন ৪৩৭ জন। এরপর পুলিশে ৮০, কাস্টমসে ৫৪ ও প্রশাসনে ২৭৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ