প্রাইমএশিয়ার পারভেজ হত্যাকাণ্ডের সময় উপস্থিত দুই ছাত্রীর অবস্থান জানতে চান আদালত

প্রাইমএশিয়ার শিক্ষার্থী পারভেজ ও দুই ছাত্রী
প্রাইমএশিয়ার শিক্ষার্থী পারভেজ ও দুই ছাত্রী  © টিডিসি সম্পাদিত

রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলায় নাটকীয় মোড় এসেছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া আল কামাল শেখ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একইসঙ্গে মামলায় সংশ্লিষ্ট দুই তরুণীকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমান আল কামালের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। আদালত সূত্রে জানা গেছে, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় আল কামাল স্বেচ্ছায় হত্যার দায় স্বীকার করেন।

অন্যদিকে, একই মামলায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম সদস্য সচিব হৃদয় মিয়াজীকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ এস এম মাঈন উদ্দিন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্যাহ তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানিতে বলেন, ‘এই মামলায় এর আগে এজাহারনামীয় তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ আসামি এজাহারনামীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিডিও ফুটেজ ও সিসি ক্যামেরা দেখেই এ মামলার সঙ্গে আসামির সংশ্লিষ্টতা থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এ নৃশংস হত্যার পেছনে রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে বা অন্য কোন কারণ আছে কি না সেটা জানার জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী তাসলিমা মিনু বলেন, ‘হৃদয় ফার্মেসি ডিপার্টমেন্টের এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা অন্য ডিপার্টমেন্টের। এ হত্যার সঙ্গে আমার মক্কেলের কোনো সম্পর্ক নেই। পারভেজ তার ডিপার্টমেন্টের কেউ না। মেয়েদেরও তিনি চেনেন না।’ পরে বিচারক মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাস করেন, ‘মেয়েরা কোথায়? তাদের ধরেননি কেন?’

জবাবে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, ‘এ মামলায় মেয়েদের সন্দেহ করার মতো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাইনি। সিসি ক্যামেরায় তাদের দেখা যায়নি। আবু জর পিয়াস নামে একটা ছেলে সবকিছু অর্গানাইজ করেছে। আমরা তাকে খুঁজছি।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘মামলার সঙ্গে মেয়েদের সংশ্লিষ্টতা আছে। তারা স্পটে ছিল, মেয়েগুলোর ভূমিকা ছিল। তাদের খুঁজে বের করুন।’

এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘এ মামলার আসামি কে কে? সেটা এজাহারে স্পষ্ট বলা আছে। এক, দুই ও তিন নম্বর আসামি কে কী ভূমিকা রেখেছে, সেটাও দেওয়া হয়েছে। তাদের ধরা হয়েছে। রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে। এ মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত সিসি ক্যামেরায় তার (হৃদয়) কোনো ভূমিকার কথা বলা নাই। রাজনৈতিকভাবে তাকে এ মামলায় জড়িত করা হয়েছে। তাকে রিমান্ড না দিয়ে জেলগেইটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিন।’

শুনানি শেষে আদালত তার ৭ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। গত ২১ এপ্রিল রাতে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রাম থেকে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১১। এর আগে গত ২১ এপ্রিল এ মামলায় আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) ও আল আমিন সানি (১৯) নামে তিনজনের সাত দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।


সর্বশেষ সংবাদ