মরক্কোর ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়াল

মরক্কোর ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়াল
মরক্কোর ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়াল  © সংগৃহীত

আফ্রিকার দেশ মরক্কোর মধ্যাঞ্চলে গত ৬০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প ছিল এটি। ভূমিকম্পের পর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়াও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে অনেকে। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে মারাকেশসহ মরক্কোর বিস্তীর্ণ জনপদ এক রকম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। খবর আল জাজিরা

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে দেশটির মধ্যাঞ্চলে ৬.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। একে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প বলে অভিহিত করা হচ্ছে। 

ভয়াবহ ভূমিকম্পে ব্যাপক মানুষ নিহতের ঘটনায় শনিবার দেশটির কর্তৃপক্ষ তিনদিনের শোক ঘোষণা করেন। ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ২০১২ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন ২ হাজার ৫৯ জন। বাড়ি ঘর ছাড়া হয়েছেন বহু মানুষ। 

ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মারাক্কেশ শহর থেকে ৭১ কিলোমিটার দূরে এটলাস পর্বতমালা এলাকার ১৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার গভীরে। স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পর লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন।

প্রথম ভূমিকম্প আঘাত হানার ১৯ মিনিট পর আবারও ৪ দশমিক ৯ মাত্রার ভূ-কম্পন অনুভূত হয়। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বেশ কিছু গ্রাম পুরোপুরি সমতল হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া রাজধানী রাবাতের পাশাপাশি কাসাব্লাঙ্কা, আগাদির এবং এসসাউইরাতেও কম্পন অনুভূত হয়।

মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, পাহাড়ের গ্রামগুলোতে সাধারণ মাটির ইট, পাথর এবং কাঠের তৈরি বাড়িগুলো ভেঙে পড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ধ্বংসের মাত্রা মূল্যায়ন করতে কিছুটা সময় লাগবে। 

ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, তাদের খাদ্য ও পানির তীব্র সংকট রয়েছে। কিন্তু এই ধরনের জায়গায় খাবার ও পানি পৌঁছানো কঠিন, পাহাড়ি রাস্তাগুলোতে পাথর এবং অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকায় জরুরি পরিষেবার দলগুলোকে সেখানে পৌঁছতে পারছে না। 

এদিকে, ভূমিকম্পের পরপরই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। শেষ খবর অনুযায়ী উদ্ধার অভিযান চলছিল। মরক্কোর সহায়তায় এগিয়ে আসার কথা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল আল-হাউস দেশটির অন্যতম প্রধান পর্যটন এলাকা মারাকেশ থেকে ৭২ কিলোমিটার (৪৫ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত।

ভূমিকম্পের পর মরক্কোয় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুই হাজার, যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে ২০০৪ সালে মরক্কোয় এক ভূমিকম্পে ৬২৮ জন নিহত ও ৯২৬ জন আহত হয়। ১৯৬০ সালে আগাদির অঞ্চলে আঘাত হানা ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। ১৯৮০ সালে মরক্কোর প্রতিবেশী আলজেরিয়ার এল আসনামে ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে আড়াই হাজার মানুষ নিহত ও অন্তত তিন লাখ মানুষ গৃহহারা হয়েছিল।


সর্বশেষ সংবাদ