ভাড়া ১৫ টাকাই দিতে হবে, তর্ক করতে পারব না

জ্বালানি তেল বাড়লেও সকাল থেকেই রাজধানীতে গাড়ির চাপ দেখা যায়। কারওয়ান বাজার এলাকার দৃশ্য।
জ্বালানি তেল বাড়লেও সকাল থেকেই রাজধানীতে গাড়ির চাপ দেখা যায়। কারওয়ান বাজার এলাকার দৃশ্য।  © টিডিসি ফটো

রাজধানীর ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে বনশ্রী হয়ে মোহাম্মদপুর রুটে চলাচলকারী স্বাধীন বাসে উঠেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী রাজু আহমেদ (মূল নাম ব্যবহার করা হয়নি)। তিনি মগবাজার থেকে ফার্মগেট যেতে প্রতিদিন ভাড়া দিতেন ১০ টাকা। তবে আজ কন্ডাক্টর বললেন, আরও পাঁচ টাকা দিতে হবে। কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, তেলের দাম বেড়েছে।

অথচ মগবাজার থেকে ফার্মগেটের দুরত্ব তিন কিলোমিটারেরও কম। নতুন করে সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী, সাত টাকা ভাড়া হওয়ার কথা। কন্ডাক্টরকে এ কথা স্মরণ করিয়ে দিতেই তার জাবাব, এত তর্ক করতে পারব না। ওই চাকরিজীবী এর প্রতিবাদ করলেও একটু পরে থেমে গেলেন। ভাড়াও দিলেন ১৫ টাকা। পাশেই আরেকজন একই কারণে তর্কে জড়ালে কন্ডাক্টরের জবাব, ভাড়া দিলে ১৫টাকাই দিতে হবে। না দিতে চাইলে দিয়েন না।

এ সময় পাশ থেকে মাঝ বয়সী এক ব্যক্তি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, ‘ওদেরই বা কি বলব। আগে অল্প ভাড়া বাড়ালে প্রতিবাদ করা যেত। এখন একবারে ৪৬ টাকা পর্যন্ত তেলের দাম বাড়িয়েছে। তারাই বা কী করবে।’ এরপর বাসের আর কেউ কোনও কথা না বলে চুপ হয়ে গেলেন।

আরো পড়ুন: বাসে সর্বনিম্ন ভাড়া আগের মতই

একদিন আগেই বেড়ে গেছে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম। আর গত রাতে বাড়ানো হয়েছে বাস ভাড়া। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দূরপাল্লার বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৮০ পয়সার জায়গায় হয়েছে ২ টাকা ২০ পয়সা। আর ঢাকাসহ মহানগরগুলোয় কিলোমিটারে ২ টাকা ১৫ পয়সার জায়গায় করা হয়েছে ২ টাকা ৫০ পয়সা। মহানগরে মিনিবাসের ভাড়া কিলোমিটারে ২ টাকা ৫ পয়সার জায়গায় হয়েছে ২ টাকা ৪০ পয়সা। বাসে ১০ ও মিনিবাসে ৮ টাকা সর্বনিম্ন ভাড়া।

তবে এই নিয়ম ঢাকার অধিকাংশ বাসেই মানা হচ্ছে না। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে আজিমপুর রুটে চলাচলকারী দেওয়ান পরিবহনে উঠেছিলেন ফারহানা। তার কাছেও ১০ টাকার স্থলে ১৫ টাকা ভাড়া দাবি করেন কন্ডাক্টর। যদিও শিক্ষার্থী হওয়ায় হাফ ভাড়া হিসেবে সাত টাকা দিয়েছেন।

বেসরকারি চাকরীজীবী শিহাব কল্যাণপুর থেকে কারওয়ান বাজারে আগে আসতেন ১০টাকা ভাড়া দিয়ে। তবে আজ সরকারি সংস্থা বিআরটিসির বাসেই ১৫ টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি বলছিলেন, প্রায় প্রতিটি যাত্রীর সঙ্গেই কন্ডাক্টরের ভাড়া নিয়ে তর্কাতর্কি হচ্ছে। এ কারণে আমি প্রতিবাদ না করে ভাড়া দিয়ে দিয়েছি।


সর্বশেষ সংবাদ