বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ৪২ হাজার পদ বিলুপ্ত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২১, ০৯:২৫ AM , আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৩:৩৬ PM
করোনার পর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৪২ হাজারের বেশি পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে ১ম থেকে ২০তম গ্রেডের বিভিন্ন পদ রয়েছে। এসব পদগুলো দীর্ঘদিন অকার্যকর ছিল। অর্থ মন্ত্রণালয় এসব পদ বিলুপ্তির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি বিলুপ্ত করা হয়েছে রেল মন্ত্রণালয়ের। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সূত্র থেকে জানা গেছে, পদ মধ্যে ১৮৫টি ক্যাডার পদ স্থায়ীভাবে বিলুপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্প থেকে আসা ৫ হাজার ২৭৮টি পদ অস্থায়ীভাবে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া ১৯৫টি পদ রয়েছে অন্যান্য ক্যাডার। বাকি ৩৬ হাজার ৬৪০টি পদ রয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন বলেছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অফিস সহায়ক পদ ছিল এবং কম্পিউটার অপারেটর পদ আলাদা ছিল। এখন দুটি পদকে একটি করে অফিস সহায়ক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি অফিসে পিয়ন পদ তুলে দেওয়া হয়েছে। ফরাস নামে একটি পদ ছিল। এ পদটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগের করণে সরকারের অনেক আর্থিক সাশ্রয় হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, প্রতি বছরই জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। কিছু পদ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে থাকে যেগুলোতে নিয়োগের প্রয়োজন হয় না। দীর্ঘদিন খালি পড়ে থাকে। মন্ত্রণালয়গুলো এ ধরনের পদ বিলুপ্তির প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে দিয়ে থাকে। তবে সম্প্রতি পদ বিলুপ্তির আরও একটি কারণ হলো-বিভিন্ন বিভাগ, অধিদপ্তর ও সংস্থায় লোকবল কাঠামোতে পুনর্বিন্যাস করা। যে কারণে পুরোনো অনেক পদ বিলুপ্ত করা হচ্ছে।
সূত্র থেকে আরও জানা জানা যায়, রেলওয়েকে আধুনিক করতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর ধারাবাহিকতায় গত বছর রেল মন্ত্রণালয়ে অনেক পদের বিলুপ্তি করা হয়েছে। রেলওয়েতে মুঞ্জরিকৃত ৪০ হাজার ২৭৫টি চাকরির পদ রয়েছে। এর বিপরীতে ২৪ হাজার ৫৭৩ জন কাজ করছে।
রেল মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০১০ সালে নিয়োগের পর আর কোন নিয়োগ দেওয়া হয়নি। রেলওয়ের সংস্কার প্রকল্প কর্তৃক সুপারিশকৃত ক্যাডার কম্পোজিশন ও অন্যান্য দাপ্তরিক পুনর্গঠনের প্রয়োজন। এবং অনুমোদিত কাঠামো মোতাবেক জনবল নিয়োগের প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে ২০২০ সালের আগস্টে রেলওয়ের বিভিন্ন পদ বিলুপ্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
ব্যয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শুলেখা রানী বসু জানান, প্রকল্প শেষে অনেকে আদালত থেকে রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তর নির্দেশ নিয়ে আসেন। এ কারণে তাদের রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এটি একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা হয়। তাই পূর্বের পদগুলো বিলুপ্ত করে নতুন পদ সৃজন করা হয়। এছাড়া দীর্ঘদিন খালি আছে এমন পদে লোকবল নিয়োগ দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। তাদের দেওয়া প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে অর্থ বিভাগ পদ বিলুপ্তিতে সম্মতি দিয়ে থাকে।
এবিষয় সাবেক সিনিয়র অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ জানিয়েছেন, সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে বেশকিছু পদ আছে যেগুলোতে দীর্ঘদিন নিয়োগ দেওয়া হয় না। এ কারণে পদগুলো বিলুপ্ত করা হয়। এছাড়া অনেক সংস্থা, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তর বিলুপ্ত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সব পদ বিলুপ্ত করা হয়। পাশাপাশি কিছু পদের পরিবর্তন হয়। আর পদ বিলুপ্ত হলে সরকারের ব্যয়ের পরিমাণ কিছুটা সাশ্রয় হবে।