২১ জুন ২০২৫, ০৭:০৮

যশোরে বাড়ছে করোনায় মৃত্যু ঝুঁকি, ৩ দিনে ৩ জনের মৃত্যু

যশোরে করোনাভাইরাসে মৃত্যু সংখ্যা বাড়ছে  © ফাইল ফটো

যশোরে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ঝুঁকি আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। গত তিন দিনে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একে একে মারা গেছেন তিনজন করোনা আক্রান্ত রোগী। সর্বশেষ করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার (২১ জুন) বিকেলে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার গদখালী গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী সাবিলা বেগমের (৫৫) মৃত্যু হয়। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে তিনজনের মৃত্যু এখন যশোরে করোনা আতঙ্ক ফের বাড়ছে। সাবিলা বেগম যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকায় ছেলের ভাড়াবাড়িতে বসবাস করতেন। ৫ জুন ঠান্ডা, কাশি ও জ্বর নিয়ে তিনি যশোরের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরীক্ষায় তার শরীরে করোনা শনাক্ত হলে তাকে ১২ জুন যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। আইসিইউতে থাকা অবস্থায় ২০ জুন বিকেলে তার মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন: খেলতে গিয়ে প্রাণ গেল দুই শিশুর

হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ ডা. রবিউল ইসলাম তুহিন জানান, সাবিলা বেগম আগে থেকেই শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তার অবস্থা দ্রুত অবনতি ঘটে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় তার মৃত্যু ঘটে।

এর আগে গত বুধবার ভোরে বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর গ্রামের মৃত শেখ মখছেদ আলীর ছেলে আমির হোসেন (৬৮) ও একই দিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের মাহমুদকাঠি গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে ইউসুফ আলী (৪৫) করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ফলে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩ দিনে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিনজনে।

এদিকে করোনা পরীক্ষার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ৫ হাজার কিটের চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ২ হাজার কিট। বৃহস্পতিবার কিটগুলো হাসপাতালে পৌঁছেছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, এই কিটগুলো শুধুমাত্র হাসপাতালে ভর্তি করোনা সন্দেহভাজন রোগীদের র‌্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত হবে। কিটের পরিমাণ সীমিত হওয়ায় আপাতত বাইরের রোগীদের পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। তিনি সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান, কারণ পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে।

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা জানান, কেবলমাত্র জেনারেল হাসপাতালে কিট বরাদ্দ পৌঁছেছে। তবে জেলার অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো এখনো কিট পায়নি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, চলতি সপ্তাহেই সেখানেও কিট বরাদ্দ মিলবে। কিটের অভাবে এতদিন ধরে সরকারিভাবে করোনা পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। তবে নতুন করে পাওয়া ২ হাজার কিট দিয়ে শনিবার থেকে ভর্তি রোগীদের পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান তিনি।