জামের স্বাস্থ্য উপকারিতা জানলে অবাক হবেন!

বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে ভরপুর জাম
বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে ভরপুর জাম  © প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশে মৌসুমি ফলের অন্যতম জাম। শহর কিংবা গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় এ গাছ দেখা যায়। স্বল্প সময় স্থায়ী এ ফল খেতে অনেক সুস্বাদু। ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার ও এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় এ ফল দেহের নানা রোগব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াই করে। 

বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এ ফলে খনিজ উপাদানের মধ্যে রয়েছে পানি ৮৩.১৩ গ্রাম, আমিষ ০.৭২ গ্রাম, শর্করা ১৫.৫৬ গ্রাম, ফ্যাট ০.২৩ গ্রাম, সোডিয়াম ১৪ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.১৯ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৯ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৭ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ১৫ মিলিগ্রাম ও পটাশিয়াম ৭৯ মিলিগ্রাম। 

আরও পড়ুন: এলাচের পুষ্টি উপাদান ও উপকারিতা

এছাড়া জামের বিভিন্ন ভিটামিন উপাদান হচ্ছে- থায়ামিন (ভিটামিন-বি১) ০.০০৬ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাবিন (ভিটামিন-বি২) ০.১২ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন (ভিটামিন-বি৩ ) ০.২৬০ মিলিগ্রাম, প্যানথোনিক অ্যাসিড (ভিটামিন-বি৫) ০.১৬০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি৬ ০.১৬০ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন-সি ১৪.৩ মিলিগ্রাম।

পুষ্টি সমৃদ্ধ এসব উপাদান দেহ গঠনের পাশাপাশি রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই সহায়ক। তবে জেনে নেয়া যাক জামের স্বাস্থ্য বিভিন্ন উপকারিতা-

১) জাম ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। এ ফল ভিটামিন-সি এর ভালো উৎস। এক-কাপ জামে ৩০.২ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি থাকে। যা হাড়, সংযোগকারী টিস্যু এবং রক্তনালীতে কোলাজেন গঠনের অবিচ্ছেদ্য উপাদান। ফলে ক্ষত আরোগ্য, ত্বক পুনরুজ্জীবিত, স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ এবং শরীরে ফ্রি র‌্যাডিকেল হ্রাস করে ক্যন্সার ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে জাম।

২) জাম কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবারের অভাবে হজমে সমস্যা, পেট ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। কিন্তু জামে থাকা ফাইবার এ সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

৩) জাম হাড় মজবুত করতে সহায়ক। এতে থাকা ভিটামিন কে হাড়ের স্বাস্থ্য গঠনে ভূমিকা রাখে। কারণ 
ভিটামিন কে-এর অভাবে হাড় পাতলা হয়ে ভেঙে যেতে পারে। তাছাড়া ভিটামিন-কে রক্ত জমাট বাঁধা, সহজে ক্ষত নিরাময় এবং মল ও প্রস্রাবের জটিলতা রোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে। 

আরও পড়ুন: রসুনের স্বাস্থ্য উপকারিতা ও অপকারিতা

৪) জাম দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কারণ এতে থাকা ম্যাঙ্গানিজ দেহের ইমিউন সিস্টেমের উন্নত করে। তাছাড়া শরীরে কার্বোহাইড্রেট, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং কোলেস্টেরল বিপাকে সহায়তা করে। এমনকি অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ করার পাশাপাশি  রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং মৃগীরোগের ঝুঁকি কমায় জামে থাকা এই ম্যাঙ্গানিজ।

৫) জাম মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত করে। জার্নাল অফ এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রির গবেষণা বলছে, ব্ল্যাকবেরির মতো বেরি ফল খেলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং বার্ধক্যজনিত স্মৃতিশক্তি হ্রাস রোধে সহায়তা করে।

আরও পড়ুন: আদার যাদুকরী স্বাস্থ্য উপকারিতা

৬) দেহের রক্ত পরিশোধিত করতে জাম বেশ কার্যকরী। কেননা এতে থাকা আয়রন ও ভিটামিন সি রক্ত পরিশোধনের পাশাপাশি রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সহায়তা করে।

৭) জাম দেহে কঠিন রোগের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়তা করে।  কারণ এতে থাকা পলিফেনল অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত। যা ক্যান্সার প্রতিরোধ সহায়ক। এমনকি জামের পটাসিয়াম ও ফসফরাস উপাদানসমূহ হৃদযন্ত্র ভালো রাখার পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।


সর্বশেষ সংবাদ