ভর্তিচ্ছুদের পাশে মাভাবিপ্রবির ছাত্র সংগঠনগুলো: গ্রীষ্মের খরতাপেও মানবিক সেবায় অবিচল

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি)
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি)  © সংগৃহীত

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে গেছে একাধিক ছাত্র ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তথ্য সহায়তা, মানবিক সেবা ও পরীক্ষা সংক্রান্ত নানা ব্যবস্থার মাধ্যমে এসব সংগঠন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কষ্ট অনেকটাই লাঘব করেছে।

শুক্রবার (৯ মে) সকাল থেকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে সেবা বুথ চালু করে কাজ শুরু করে সংগঠনগুলো। উল্লেখযোগ্য সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, রোটারেক্ট ক্লাব অব মাওলানা ভাসানী টাঙ্গাইল এবং কাম ফর রোড চাইল্ড (সিআরসি)। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তথ্য সহায়তা কেন্দ্র পরিচালনা করা হয়।

শিবির

ছাত্রদলের মাভাবিপ্রবি শাখার কর্মী সুমন মিয়া জানান, পরীক্ষার্থীদের জন্য বাইক সার্ভিস, খাবার-পানি ও বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে কাজ করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি। সংগঠনটির কার্যক্রমে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও টাঙ্গাইল পৌর মেয়র মাহমুদুল হক সানুর সহযোগিতা ছিল বলেও জানান তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

ইসলামী ছাত্রশিবির মাভাবিপ্রবি শাখার সভাপতি এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, তাদের ‘শহীদ তাহমিদ তামিম তথ্য কেন্দ্র’ থেকে শিক্ষার্থীদের পানির ব্যবস্থা, হাতপাখা, তথ্য সহায়তা, মেডিসিন কর্নার এবং ডিভাইস জমা রাখার ‘অমানত কর্নার’ চালু করা হয়। শহীদ তামিমের আত্মত্যাগ স্মরণ করে তিনি দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মো. আক্তারুজ্জামান সাজু জানান, তারা কলম বিতরণ ও ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা করেন। নিজেদের অর্থায়নে পরিচালিত এ কার্যক্রমে তারা গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

ছাত্রদল

রোটারেক্ট ক্লাব অব মাওলানা ভাসানী টাঙ্গাইলের সভাপতি পলাশ হোসেন জানান, ক্লাবের পক্ষ থেকে তথ্য সহায়তা বুথ, ডিভাইস সংরক্ষণ কেন্দ্র এবং ছায়াযুক্ত বসার জায়গা তৈরি করা হয়। শতাধিক ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিরাপদে সংরক্ষণ করা হয় বলেও জানান তিনি।

রোটারেক্ট

সিআরসি’র সভাপতি আরিফুল ইসলাম বলেন, হেল্প ডেস্ক, ডিভাইস সুরক্ষা, আগের রাতেই থাকার ব্যবস্থা, অভিভাবকদের জন্য বসার জায়গা ও তথ্য সহায়তা—সব কিছুই তাদের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

বাগছাস

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. তুষার আহমেদ জানান, প্রায় ১৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী যুক্ত থেকে ৫০০টির বেশি চেয়ার ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। খরচের বড় অংশ স্পন্সর ও নিজেদের তহবিল থেকে এসেছে বলে জানান তিনি।

WhatsApp Image 2025-05-09 at 9-51-59 AM

সিআরসি

ছাত্র সংগঠনগুলোর এমন মানবিক ও সেবামূলক উদ্যোগ ভর্তি পরীক্ষার দিনগুলোকে করেছে সহজ, মানবিক ও সহমর্মিতাপূর্ণ। পরীক্ষার্থীরা যেমন পেয়েছে নিরবিচারে সহায়তা, তেমনি অভিভাবকরাও স্বস্তি পেয়েছেন নানা উদ্যোগে। এই প্রয়াসকে অনেকেই ভবিষ্যতের জন্য একটি উদাহরণ হিসেবেও দেখছেন।


সর্বশেষ সংবাদ