প্রায় ২০০ কোটি টাকার অর্ডার

উধাও ই-কমার্স কোম্পানী ই-অরেঞ্জ

উধাও ই-কমার্স কোম্পানী ই-অরেঞ্জ
উধাও ই-কমার্স কোম্পানী ই-অরেঞ্জ  © সংগৃহিত

২০০ কোটি টাকার পণ্যের অর্ডার নিয়ে এবার উদাও হয়ে গেছে ইকমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ। ইতিমধ্যেই মালিকানা পরিবর্তন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন মালিককেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বন্ধ করা হয়েছে তাদের গুলশান কার্যালয়। ই-অরেঞ্জের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসিডর ছিলেন ক্রিকেটার ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা। ভুক্তভোগী অনেকের দাবি, মাশরাফির বিজ্ঞাপন দেখেই তাঁরা এই অনলাইন শপের ওপর আস্থা রেখে পণ্যের অর্ডার করেছিলেন।

গতকাল সোমবার (১৬ আগস্ট) গুলশানে ই-অরেঞ্জের বন্ধ কার্যালয়ের সামনে ঝড়ো হয়েছেন প্রায় শতাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক। তাদেরই একজন হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, সাতটি বাইক অর্ডার দিয়েছেন তিনি। গত জুলাই মাসে অর্ডার ডেলিভারি দেওয়ার কথা থাকলেও তারা তা করেনি। এখন তাদের কাছ থেকে কোনো সদুত্তর পাচ্ছেন না। তাদের কার্যক্রমও বন্ধ। এখন কার কাছে যাবো বুঝতে পারছি না।

গত ১৮ জুলাই ই-অরেঞ্জ একটি ডেলিভারি তারিখ প্রকাশ করে এবং পরবর্তীতে লকডাউনের কথা বলে দিয়ে ডেলিভারি বন্ধ করে দেয় এবং জানায় যে লকডাউন শেষ হলে ডেলিভারি কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে। লকডাউন শেষ হওয়ার আগের দিন ১০ আগস্ট তারা আবার নতুন করে ১৬ আগস্ট ডেলিভারি লিস্ট দেবে বলে জানায়। কিন্তু গতকাল ই-অরেঞ্জ তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে জানায়, তাদের আগের বাইক সেলারের সঙ্গে তারা চুক্তি বাতিল করেছে। তাই নতুন সেলার পেতে বা নিজেরা বাইক ইমপোর্ট করতে ৪৫-৬০ কর্মদিবস লাগবে। তাই যারা বাইক নিতে চায় তাদের অপেক্ষা করতে হবে, অথবা রিফান্ড রিকোয়েস্ট করতে হবে।

বেশ কিছু গ্রাহক রিফান্ড চেয়ে ই-অরেঞ্জে ফোন করলে জানানো হয়, ২১ কর্মদিবস লাগবে রিফান্ড পেতে। তখন সরকার নির্ধারিত ১০ দিনের কথা বলায় তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।

জানা যায়, গত ১১ জুলাই ই-অরেঞ্জের মালিকানা পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমান মালিক বিথী আক্তার। কিন্তু বর্তমান বা সাবেক মালিক সোনিয়া মেহজাবিন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। গতকাল অফিসের হটলাইন নম্বর এবং সনিয়া মেহজাবিনের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে গতকাল সোমবার ফেসবুক পেজে ই-অরেঞ্জ শপ এর গ্রাহকদের জানায়, ই-অরেঞ্জ শপের সঙ্গে ১ জুলাই থেকে মাশরাফি বিন মর্তুজার চুক্তি শেষ হয়েছে। তাই আমাদের অফিশিয়াল কোনো বিষয়ে তিনি কোনোভাবেই অবগত নন এবং তিনি অফিশিয়ালভাবে কোনো কিছুই আপডেট দিতে পারবেন না। আর যাঁরা পণ্য অর্ডার করেছেন, কিন্তু এখনো পণ্য হাতে পাননি, আশা করি আমরা দ্রুত এই সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজে বের করব এবং আপনাদের পণ্য আপনাদের বুঝিয়ে দিতে পারব। ১৯ আগস্ট থেকে মোটরসাইকেল বাদে সব পণ্য সরবরাহ শুরু হয়ে যাবে।

এদিকে সোমবার সন্ধ্যার পর ই-অরেঞ্জ এর গ্রাহকরা বিচ্ছিন্নভাবে মিরপুর সাড়ে এগারোস্থ রোডে অবস্থিত মাশরাফির বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। এসময় তারা মাশরাফির সঙ্গে আলোচনার দাবি জানান। ই-অরেঞ্জ এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মাশরাফি সম্প্রতি এই দায়িত্ব থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। ঘোষণা দেন, তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আর যুক্ত নন।


সর্বশেষ সংবাদ