জামায়াত আমির নিয়ে মন্তব্যের জেরে শাস্তি, কী লিখেছিলেন সেই ওসি?
জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর মন্তব্য করায় গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) শেখ মো. আমিরুল ইসলাম মুরাদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনারের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জিএমপি সদর দপ্তরে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জানা যায়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের উদ্ধৃতি নিয়ে একটি সংবাদমাধ্যম ফটোকার্ড করে। সেই ফটোকার্ডে ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম লেখেন, ‘আগে গণভোট দরকার যে স্বাধীনতাবিরোধীদের এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার আছে কি না?’
পরে এর জেরে ২০ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জামায়াতের গাজীপুর মহানগর মজলিশে শুরার সদস্য মো. আমজাদ হোসেন ও পুবাইল থানা জামায়াতের নায়েবে আমির মোহাম্মদ শামীম হোসেন মৃধা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন: জামায়াত আমিরের বক্তব্য নিয়ে মন্তব্যের অভিযোগে ওসি প্রত্যাহার
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ওসি আমিরুল ইসলাম পুবাইল থানায় যোগ দেওয়ার পর থেকেই একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া এবং জামায়াত ইসলামী ও দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আসছেন। এ ছাড়া তিনি ওই রাজনৈতিক দলের নেতাদের পুলিশ প্রটোকল দিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি জামায়াতের আমিরের বক্তব্যে ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য করেন — ‘জামায়াতের লোকেরা স্বাধীনতা বিরোধী, তারা বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে কিনা তা গণভোটে নির্ধারণ হওয়া উচিত।’ একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন, যা প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা নষ্ট করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তাকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জিএমপি সদর দপ্তরে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, শেখ মো. আমিরুল ইসলামকে পূবাইল থানা অফিসার-ইন-চার্জ হিসেবে রাখা হবে না; তিনি গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন। তিনি তার দায়িত্বভার পরবর্তী জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করে ২৮ অক্টোবরের মধ্যে জিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে রিপোর্ট করবেন।
গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) জাহিদুল হাসান বলেন, অভিযোগ পেয়ে একজন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন পাওয়ার পর যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।