২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৪৬

অঝোরে কাঁদলেন বাবা—‘আমার জুবু আর নেই, ওর মাকে আমি কী বুঝ দেব’

জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেনের জানাজায় কাঁদছেন বাবা মোবারক হোসেন  © সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেনের জানাজা নিজ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা মোবারক হোসেন। চোখ টলমল করে উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবার। সোমবার (২০ অক্টোবর) বেলা ২টার দিকে বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দলীয় নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জোবায়েদের বাবা মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলের নাম ছিল জোবায়েদ হোসেন। আমি কইতাম জুবু। আমি যখন ঢাকাতে আসতাম, আমার ছেলে কাঁধে হাত দিয়ে হাটতাম। আজ আমার জুবু নেই। জুবুর মাকে আমি কি জবাব দেব? সেই চিন্তায় আমি অস্থির।’ এ সময় তিনি ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন।

জানাজার সময় ক্যাম্পাসের বাতাসে ছিল শোকের নিস্তব্ধতা। সহপাঠীদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পুরো প্রাঙ্গণ। একে একে সবাই বিদায় জানান প্রিয় মুখটিকে। জানাজায় জোবায়েদের বাবার অঝোরে কান্না দেখে সবার চোখ টলমল করে ওঠে। পরে ছাত্রদল ও শিবির নেতাকর্মী সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। তারা জোবায়েদ হত্যার বিচার চেয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।

জুবায়েদ হোসাইন ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। একইসঙ্গে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় নুরবক্স লেনের রৌশান ভিলায় এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন।

আরও পড়ুন: শেষবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলেন-ছাড়লেন জোবায়েদ

রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে টিউশনি ছাত্রীর বাসার তিন তলায় খুন হন জোবায়েদ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসায় ওই ছাত্রী জানান, প্রেমিকের সঙ্গে ৯ বছরের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় খুন করা হয় জুবায়েদকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত মেয়েটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসাইনকে পছন্দ করতেন বলে জানিয়েছেন। 

এ ঘটনা জেনে যান তার প্রেমিক। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় চতুর্থ শ্রেণি থেকেই তাদের পরিচয় ছিল। এরপর তার সঙ্গে মেয়েটির ৯ বছরের প্রেম ছিল। জুবায়েদকে পছন্দ করায় তার সম্পর্ক ছিন্ন করলে তিনি ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে জুবায়েদকে হত্যা করেন। 
অভিযুক্ত তরুণের নাম মো. মাহির রহমান। তিনি রাজধানীর বোরহানউদ্দিন কলেজে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। নুরবক্স এলাকাতেই তার বসবাস। তিনিসহ ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে এক বন্ধু ধরতে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।