‘জ্ঞান ফেরার পরই নিজেকে আবিষ্কার করেন গোপন রুমে, বের হন সুকৌশলে’— কী হয়েছিল মাহিরার সঙ্গে
এইচএসসি পরীক্ষার্থী মাহিরা বিনতে মারুফ পুলি দ্বিতীয় পরীক্ষা দেওয়ার জন্য তার বসুন্ধরার বাসা থেকে বেরিয়ে মিরপুর কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন। বাসা থেকে বের হওয়ার পরই একজন নারী মাহিরার নাকের সামনে চেতনানাশক কিছু ধরলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর তিনি আর কিছু মনে করতে পারেন না। জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে একটি রুমের ভেতর আবিষ্কার করেন।
এইচএসসি পরীক্ষার জন্য বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হওয়া মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী মাহিরাকে রবিবার (২৯ জুন) রাতে উদ্ধার করে র্যাব-৪।
সোমবার (৩০ জুন) র্যাব-৪ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপস) কে এন রায় নিয়তি এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, মাহিরা এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তার বাসা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এবং পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল মিরপুর কলেজ। তিনি পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশে রবিবার সকাল আটটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ওই দিন দুপুর একটার মধ্যে তার পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা পরীক্ষা কেন্দ্রে খোঁজ নিতে যান।
আরও পড়ুন: আস-সুন্নাহর আবাসন সুবিধা পাবেন জবির নবীন ৫০০ শিক্ষার্থী
কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে মাহিরার পরিবার জানতে পারে, মাহিরা রবিবার পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হননি। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেও দিনভর মাহিরাকে না পেয়ে তার পরিবার ডিএমপির ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরই মধ্যে তার নিখোঁজ হওয়ার খবরটি মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলে র্যাব এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং সাভার এলাকায় মেয়েটির অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান পরিচালনা করে।
উদ্ধার শিক্ষার্থীর ভাষ্যমতে, ২৯ জুন তার এইচএসসি পরীক্ষা ছিল। সকাল আটটার দিকে বাসা থেকে পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পরই একজন নারী তার সঙ্গে কথা বলতে আসেন। কথা বলার এক পর্যায়ে ওই নারী চেতনানাশক কিছু তার নাকের সামনে ধরলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর তিনি আর কিছু মনে করতে পারেন না। জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে একটি রুমের ভেতর আবিষ্কার করেন।
আরও পড়ুন: ঢাবি অধ্যাপকের ‘যৌন হয়রানি’ নিয়ে ক্যাম্পাসে পোস্টারিং, ছিঁড়ে ফেললেন সহকারী প্রক্টর!
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এন রায় নিয়তি আরও জানান, একই সময়ে র্যাব-৪-এর একটি আভিযানিক দল মেয়েটির সম্ভাব্য অবস্থান সাভার এলাকায় নিশ্চিত করে এবং অভিযান পরিচালনার জন্য মেয়েটির অবস্থানরত এলাকায় যায়। মেয়েটি অজ্ঞাত বাসায় বেশ কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে সুকৌশলে বাসা থেকে বের হয়ে যান। র্যাবের টহল দল তখন মেয়েটির সুনির্দিষ্ট অবস্থান নির্ণয় করে তাকে উদ্ধার করে এবং হেফাজতে নেয়। উদ্ধার মেয়েটিকে প্রাথমিক আইনি কার্যক্রম শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মাহিরার বাসা ভাটারা থানাধীন জগন্নাথপুর এলাকার কেবি বিল্ডিং, যমুনা হাজী সমীর উদ্দিন রোডে। তার বাবার নাম মো. আবদুল্লাহ আল মারুফ এবং মায়ের নাম রেহানা পারভীন।