চারুকলায় ‘ফ্যাসিস্টের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রায়’ আগুন দিল কারা?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৮ AM

‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ বছর আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে প্রতিকৃতি তৈরির স্থানে দুর্বৃত্তরা আগুন দিলে সেটি পুরোপুরি পুড়ে যায়। একই সঙ্গে পুড়ছে শান্তির প্রতীক পায়রা।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে আগুন দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ। শনিবার সকালে সরেজমিনে চারুকলায় গিয়ে দেখা যায়, আগুনে দানবীয় ফ্যাসিবাদী মুখাকৃতির মোটিফটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। শান্তির পায়রা মোটিফটিও আংশিক পুড়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং পুলিশ সদস্যরা সেখেনে উপস্থিত রয়েছেন।
প্রশ্ন উঠেছে আগুনটি পরিকল্পিতভাবে লাগানো হয়েছে কিনা? এসব তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীরাও কিছু বলতে পারছেন না। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, সারারাত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল চারুকলায়। ভোরে কয়েকজন নামাজে গেলে আগুন লাগে এসব প্রতিকৃতিতে।
এ বিষয়ে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা কোনো বিশেষ ব্যক্তিকে সন্দেহ করছি না। তবে যেহেতু স্পেসিফিক ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতিতে আগুন লেগেছে, তাই আমরা একটি গ্রুপকে সন্দেহ করছি। কেননা ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিতে লাগা আগুনের আঁচ থেকে পায়রার মোটিফে আগুন লেগে আংশিক পুড়ে গেছে।
আরো পড়ুন: চারুকলায় আগুনে পুড়ল আনন্দ শোভাযাত্রার ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে ছয়টি সিসি ক্যামেরা আছে। আমরা ফুটেজ দেখে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। সার্ভার পাসওয়ার্ড লক থাকায় একটু সময় লাগছে।
প্রক্টর বলেন, বিগত কয়েকদিন যাবত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল। বিষয়টি আমলে নিয়ে আমরা জোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু নামাজের সময়টাতে কিছুটা ফাঁকা পেয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা এটাও তদন্ত করে দেখছি আমাদের কোনো ঘাটতি আছে কি না।
এ বিষয়ে ডিএমপির অ্যাডিশনাল কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস) এস এম মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, আজ ভোর ৫ টার দিকে আগুন লেগেছে বলে জানতে পেরেছি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ইচ্ছাকৃতভাবে এখানে আগুন লাগানো হয়েছে। যারা ফ্যাসিস্টের এই প্রতিকৃতি পছন্দ করছেন না, তাদের কেউ এ ঘটনা ঘটাতে পারে। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা যাবে কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে।
নিরাপত্তা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রক্টরিয়াল বডির দুইজন সদস্য এবং পুলিশের তিনজন সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। ফজরের নামাজ পড়তে প্রক্টরিয়াল বডির দুইজন সদস্য ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এসময় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা কোথায় ছিলেন তা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না। , আমি বাসা থেকে সরাসরি ঘটনাস্থলে এসেছি। অফিসে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত বলতে পারব।
শনাক্ত করতে কত সময় লাগবে জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু ঘটনার টাইম জানা গেছে। সেক্ষেত্রে ঘটনার ঘণ্টাখানেক আগের ভিডিও পর্যালোচনা করলেই খুব দ্রুত সময়ে জানা যাবে কে বা কারা এর সাথে জড়িত।