শিক্ষকদের ভাতা উত্তোলনে ধাপে ধাপে ঘুষ নেন উপজেলা কর্মকর্তারা

উপজেলা পরিষদ মদন
উপজেলা পরিষদ মদন  © সংগৃহীত

ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশনের (ডিপিএড) প্রশিক্ষণের ভাতা উত্তোলনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নেত্রকোনার মদন উপজেলার হিসাবরক্ষণ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। টাকা না দিলে ফাইল আটকে থাকে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। একই কাজের জন্য ঘুষ দিতে হয় শিক্ষা অফিসেও। এ নিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ায় শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

শিক্ষকরা জানান, মদন হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর জুবায়ের আহম্মেদ ঘুষ ছাড়া কোন কাজই করেন না। প্রাথমিক শিক্ষকদের ডিপিএড প্রশিক্ষণের উন্নীত ভাতা উত্তোলণ করতে প্রতি ধাপে ধাপে হিসাবরক্ষণ অফিসের চাহিদা মতো ঘুষ দিতে হয়। টাকা না দিলে ফাইল নড়ে না। কাজ বন্ধ হয়ে যায়। 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  শিক্ষক ডিপিএড প্রশিক্ষণে থাকা ২৯ জন শিক্ষকের প্রশিক্ষক উন্নীত ভাতা বকেয়া রয়েছে। ভাতা উত্তোলনের জন্য মদন উপজেলার ২৯ জন শিক্ষকের মধ্যে ২৬ জন ডিপিএড ভাতা উত্তোলণ করার আবেদন মঞ্জুর হয়। নিয়মনুযায়ী একজন শিক্ষক ডিপিএডের প্রশিক্ষণ ভাতা পাবে স্কেল অনুযায়ী ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।সেই ভাতা উত্তোলনের ফাইলপত্রের কাজ করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও হিসাবরক্ষণ অফিস। 

প্রশিক্ষণ করা শিক্ষকদের বকেয়া ভাতার কাজ করার জন্য প্রতিজন শিক্ষককের কাছ থেকে ৩ হাজার করে টাকা ঘুষ নেন মদন হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর জুবায়ের আহম্মেদ। সেই হিসাব মতে প্রথমে ৭৮ হাজার টাকা ঘুষ দেন ২৬ জন শিক্ষক। এখন পশিক্ষণের মোট ভাতার থেকে ২০ শতাংশ দাবি করেন তিনি। এর সাথে শিক্ষক নেতা সাখাওয়াত ভূঁইয়ার মাধ্যেমে প্রতিজনের কাজ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দাবি করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।

শিক্ষকরা ঘুষের টাকা দিতে অপারকতা প্রকাশ করায় তাদের ডিপিএড এর বকেয়া ভাতার কাজ বন্ধ রয়েছে বলে শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সম্প্রতি ঘুষ নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের ডিপিএড প্রশিক্ষণের উন্নত ভাতা উত্তোলণ ফাইলের কাজ শুরু হয়। কিন্তু হিসাবরক্ষণ অফিসের চাহিদা মতো ঘুষ না দেওয়ায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।  

ভুক্তভোগী সহকারি শিক্ষক শাহ্ জাফরিন সুলতানা জানান, ‘ডিপিএড স্কেলের বকেয়া ভাতার জন্য হিসাব রক্ষণ অফিসের জুবায়ের কে আমরা  ৩ হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছে। বকেয়া ভাতা পেতে হলে শিক্ষা অফিসের খরচ বাবদ প্রত্যেকে আবার ২ হাজার ৫০০ টাকা ঘুষ দিতে হবে বলে আমাদের সহকারি শিক্ষক সাখাওয়াত ভূইয়া জানিয়েছে। এর সাথে হিসাবরক্ষণ অফিসকে আবার মোট বিলের ২০% ঘুষ দিতে হবে। বিল উত্তোলণ করতে গিয়ে আমরা বার বার হয়রানির শিকার হচ্ছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মদন উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর জুবায়ের আহমেদ জানান, ‘বিল তৈরির জন্য টাকা পয়সা দিতে হয় না। আমার নাম ভাঙ্গিয়ে যদি কেউ শিক্ষদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকেন তাহলে এর দায়ভার তার।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তারেক সালাউদ্দিন জানান, ‘আমাদের অফিসের নাম ভাঙ্গিয়ে যদি কেউ শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence