গভীর রাতে অন্তরঙ্গ অবস্থায় ধরা প্রধান শিক্ষক, গাছের সঙ্গে বেঁধে গণধোলাই
- গাইবান্ধা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ০৫:৩৪ PM , আপডেট: ১৪ মে ২০২৪, ০৫:৩৯ PM
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে এক নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় আটক হওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষককে সুপারি গাছে বেঁধে গণধোলাই দিয়েছেন স্থানীয়রা। রোববার (১২ মে) গভীর রাতে উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের হুড়াভায়া খাঁ গ্রামের এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
গণধোলাইয়ের শিকার ওই প্রধান শিক্ষকের নাম গোলাম রব্বানী (৫০)। তিনি তালুক ফলগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং আরাজি দহবন্দ গ্রামের নিয়ামতুল্লাহ সরকারের ছেলে।
২৮ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, গভীর রাতে মাটিতে বসা বস্ত্রহীন শরীরের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানীকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে রেখেছেন স্থানীয় নারী-পুরুষ। মাটিতে বসা শিক্ষকের দুই পাশ থেকে দুই হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে দুজন ব্যক্তি।
এ সময়ে স্থানীয়দের বিভিন্ন ধরনের কথার মধ্যে তাকে আকুতি-বিলাপ করতেও শোনা যায়। তবে, কোনো এক যুবক এই দৃশ্য ভিডিও ধারণের আটকে রাখা ব্যক্তিরাই ভিডিও ধারণে বাধা দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি রোববার গভীর রাতে উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের হুড়াভায়া খাঁ গ্রামের গণধোলাইয়ের পর ঘটনাস্থল থেকে ধারণ করা। এরপরেই তাকে সুপারি গাছে বেঁধে রাখা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের হুড়াভায়া খাঁ গ্রামের এক বিবাহিত নারীর সাথে প্রধান শিক্ষক বকুলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের ফলে তিনি সুযোগ বুঝে ওই নারীর বাড়িতে মাঝে-মধ্যেই রাতে আসতেন। সেই ধারাবাহিকতায় রোববার রাতেও সুযোগ বুঝে ওই নারীর সঙ্গে দেখা করতে তার বাড়িতে আসেন প্রধান শিক্ষক।
একপর্যায়ে ওই নারীর ছেলে তাদেরকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের খবর দেন। পরে স্থানীয়রা এসে গোলাম রব্বানীকে গণধোলাই দিয়ে বাড়ির পাশের একটি সুপারি গাছে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন। পরে অভিযুক্ত শিক্ষককে তার ছোট ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুল ও রেজাউল করিম ফুলবাবু নামের এক সাবেক ইউপি সদস্য এসে তাকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানীর ভাই ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুলের মোবাইল একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে বেঁধে রাখা শিক্ষককে উদ্ধারে থাকা সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম ফুলবাবু ফোনে বলেন, স্থানীয়রা ঘটনাটি জানালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি শিক্ষক গোলাম রব্বানীকে সুপারি গাছে বেঁধে রাখা হয়েছে। পরে তার ছোট ভাই সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুল ও তার ভাতিজারা আসলে তাদের হাতে বকুলকে তুলে দিয়েছে আটককারীরা। তার আগে শিক্ষককে গণধোলাই দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, আগেও কয়েকবার এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিল এই শিক্ষক।
এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও, চলতি দায়িত্ব) আনোয়ারুল ইসলাম ফোনে বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে এমন কর্মকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরিবিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’