১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:১৬

যেসব অভিযোগে জাকসু নির্বাচন কমিশন থেকে পদত্যাগ করলেন ড. রেজওয়ানা করিম

ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা  © ফেসবুক থেকে নেওয়া

পদত্যাগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন কমিশনের আরেক সদস্য ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান। 

বিভিন্ন অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা। পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘আমি জাকসু নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্য। এই কাজ চলাকালীন সময়ে আমি আকস্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি, ফলে কমিশন কার্যালয় থেকে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হই। তাই বিগত বেশ কিছুদিনের নির্বাচন কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, যেমন—ব্যালট পেপার, বাজেট চূড়ান্তকরণ ও অমর্ত্য রায়ের ভিপি পদ প্রার্থিতা বাতিলসংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমি ওয়াকিবহাল না। এমনকি এসংক্রান্ত কোনো প্রকার তথ্য আমাকে জানানো হয়নি এবং এত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আমাকে অবগত না করে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনিকভাবে একচ্ছত্র সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

তিনি আরও লিখেছেন, ‘তথাপি দায়িত্ব ও কর্তব্যের সূত্র ধরে শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও নির্বাচনের ভোট গণনা পরবর্তী সময়ে আমি উপস্থিত হই এবং অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে আমি একজন নির্বাচন কমিশন সদস্য হিসেবে যথাসাধ্য আমার কর্তব্য পালনের চেষ্টা করি।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য যে একটি ভীষণ রকমের দুর্বল প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, অতিমাত্রার রাজনৈতিক সমীকরণ, এমনকি একজন শিক্ষকের অকাল প্রয়াণ, যিনি কোনোভাবে ভোট গণনার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগই পাননি, তাকেও নির্বাচনের ভোট গণনার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার মিথ্যা অভিযোগ এবং অদৃশ্য চাপ আমাকে এই কমিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করতে নৈতিকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।’ 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘৩৩ বছরের আকাঙ্ক্ষিত শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি, জাকসু শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব গঠন অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষার্থে তৎপর না হয়ে কেবল রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য যখন ব্যবহৃত হয়, একজন নিরপেক্ষ শিক্ষক হিসেবে উক্ত কমিশনে সদস্য পদে বহাল থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। অতএব আপনার নিকট আবেদন এই যে, আমাকে নির্বাচন কমিশন সদস্য পদ হতে অব্যাহতি দিয়ে বাধিত করবেন।’ 

এর আগে শুক্রবার রাতে নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার পদত্যাগ করেন। জাকসু নির্বাচন চলাকালে আসা অভিযোগগুলোর সুরাহা না করেই ভোট গণনা চালিয়ে যাওয়ায় পদত্যাগ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছাত্রদল, বামজোট, ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন সংগঠন এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। শুরু থেকেই নির্বাচনকে ঘিরে নানা অনিয়ম, কারচুপি ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ছাড়াও অন্যান্য ৫টি প্যানেল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা করেছে। এ ছাড়াও জাকসু নির্বাচন কমিশনের একাধিক সদস্যও বিভিন্ন অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেছেন। যার ফলে জাকসু নির্বাচন ঘিরে নানা প্রশ্ন আরও জোরালো হয়ে উঠেছে।