১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৫৫

নভেম্বর থেকে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হবে: ইউজিসি

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) ইউজিসি ও ইউনেস্কোর যৌথ আয়োজনে কমিশনের অডিটোরিয়ামে  © সংগৃহীত

আগামী নভেম্বর মাস থেকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সেবা কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)-এর সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে ধাপে ধাপে এ সেবা প্রদান করা হবে। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় একটি মডিউল ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) ইউজিসি ও ইউনেস্কোর যৌথ আয়োজনে কমিশনের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত দু’দিনব্যাপী কর্মশালা ‘ট্রেইনিং ম্যাটেরিয়াল অ্যান্ড ম্যানুয়াল ডেভেলপমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব তথ্য জানান।

অনুষ্ঠানে ইউজিসি’র ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোছা. জেসমিন পারভিনের সভাপতিত্বে কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

প্রফেসর আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় একটি বিশেষ মডিউল তৈরি করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের কী ধরনের সেবা প্রয়োজন, তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের বিষয়টি যুক্ত করা দরকার।

তিনি আরও বলেন, নতুন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক উন্নয়ন এবং পেশাদার মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগের পরামর্শ দেন তিনি।

প্রফেসর মাছুমা হাবিব বলেন, ইউনেস্কোর সহায়তায় ইউজিসি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সময়োপযোগী উদ্যোগ নিয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মানসিক দৃঢ়তা বাড়বে, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক উন্নত হবে এবং আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। 

ইউজিসি’র পরিচালক মোছা. জেসমিন পারভিন বলেন, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

ইউনেস্কোর প্রতিনিধি রাজু দাস জানান, এই মডিউলটি আবেগিক বুদ্ধিমত্তা, সামাজিক দক্ষতা ও জীবনদক্ষতার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের সচেতন অংশগ্রহণ ও সমাজমুখী আচরণে সহায়তা করবে। এটি শেখার পাশাপাশি একটি পদ্ধতিগত পরিবর্তনের অংশ—যা শিক্ষা নীতিমালার সঙ্গে একীভূত হয়ে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে ভূমিকা রাখবে।

কর্মশালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সৈয়দ তানভীর রহমান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর মো. রাফিউজ্জামানসহ ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা, কাউন্সিলর, মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, শিক্ষার্থীবৃন্দ ও ইউজিসি কর্মকর্তারা অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ইউজিসি ও ইউনেস্কো ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের চেতনাবোধকে সামনে রেখে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানসিক চাহিদাসমূহ নিরূপণে একটি ট্রেইনিং ম্যানুয়াল তৈরি করেছে।