এআই তৈরি ছবি–ভিডিও যাচাইয়ের কৌশল জানাল গুগল
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিও দিন দিন এতটাই বাস্তবসম্মত হয়ে উঠছে যে অনেক সময় আসল ও কৃত্রিম কনটেন্ট আলাদা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। এর ফলে ডিপফেক ভিডিও বা এআই দিয়ে সম্পাদিত ছবির সত্যতা যাচাইয়ে বিভ্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ ব্যবহারকারীরা। এই সমস্যা সমাধানে গুগল তাদের জেমিনি অ্যাপে এআই দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিও শনাক্তের নতুন সুবিধা চালু করেছে।
গুগলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিকভাবে এই সুবিধার মাধ্যমে শুধু গুগলের নিজস্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি বা সম্পাদিত ছবি ও ভিডিও শনাক্ত করা যাবে। ভবিষ্যতে এর পরিসর আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
যেভাবে যাচাই করবেন
এআই দিয়ে তৈরি ছবি বা ভিডিও শনাক্ত করতে হলে প্রথমে জেমিনি অ্যাপের সর্বশেষ সংস্করণ ব্যবহার করতে হবে। এরপর যে ছবি বা ভিডিও যাচাই করতে চান, সেটি অ্যাপে আপলোড করতে হবে। ভিডিও ফাইলের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০০ মেগাবাইট আকার এবং ৯০ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের কনটেন্ট আপলোড করা যাবে। ফাইল যুক্ত করার প্রক্রিয়া অন্যান্য মেসেজিং অ্যাপের মতোই সহজ।
ফাইল আপলোড শেষ হলে জেমিনিকে প্রশ্ন করতে হবে—‘Was this generated Google AI’ অথবা ‘Is this AI generated’। এরপর জেমিনি কনটেন্টটি বিশ্লেষণ করে জানাবে সেটি এআই দিয়ে তৈরি বা সম্পাদিত কি না।
যেভাবে কাজ করবে জেমিনি
জেমিনি আপলোড করা ছবি বা ভিডিওতে গুগলের সিনথআইডি (SynthID) ওয়াটারমার্ক রয়েছে কি না, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিশ্লেষণ করে। ভিডিওর ক্ষেত্রে অডিও ও দৃশ্যমান অংশ আলাদাভাবে পরীক্ষা করা হয়। প্রয়োজনে অ্যাপটি নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দেয়, ভিডিওর ঠিক কোন অংশে এআইয়ের ব্যবহার শনাক্ত হয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে জেমিনি জানাতে পারে, ভিডিওটির ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড অংশে অডিওতে এআইয়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে, তবে দৃশ্যমান অংশে কোনো চিহ্ন নেই। এতে ব্যবহারকারীরা সহজেই বুঝতে পারবেন, ভিডিওর কোন অংশ এআই দিয়ে তৈরি বা পরিবর্তন করা হয়েছে।
সিনথআইডি কী
সিনথআইডি হলো গুগলের তৈরি একটি ডিজিটাল ওয়াটারমার্কিং প্রযুক্তি। এআই দিয়ে কোনো কনটেন্ট তৈরি হওয়ার সময়ই এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তাতে অদৃশ্য একটি চিহ্ন যুক্ত করা হয়। মানুষের চোখে এটি দেখা না গেলেও বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে শনাক্ত করা সম্ভব।
গুগলের দাবি, ছবি বা ভিডিও ক্রপ করা, ফিল্টার যোগ করা, সংকুচিত করা বা ফ্রেম পরিবর্তন করলেও এই ওয়াটারমার্ক অক্ষত থাকে। ফলে এআই দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিওর উৎস শনাক্ত করা সহজ হয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া