মন্ত্রণালয়ে ইবতেদায়ী শিক্ষকদের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল
অনুদানভুক্ত ও অনুদানবিহীন সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার জাতীয়করণের ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত ইবতেদায়ী শিক্ষকদের ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে তারা শিক্ষাভবন মোড়ে দিয়ে সচিবালয় অভিমুখে যান । প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংগঠনের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান এবং সদস্য সচিব মাওলানা মো. আল আমিন।
জানা গেছে, প্রতিনিধি দলে নীলফামারী, চট্টগ্রাম, বগুড়া, ভোলা, নেত্রকোনা, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ, পিরোজপুর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, বরগুনা, সাতক্ষীরা ও গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার শিক্ষক নেতারা অংশ নিয়েছেন।
শিক্ষকরা দাবি করেছেন, চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারির জাতীয়করণের ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি, এমপিওভুক্তির লক্ষ্যে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রেরিত ১ হাজার ৮৯টি প্রতিষ্ঠানের ফাইল দ্রুত অনুমোদন দিতে হবে।
অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— অনুদানবিহীন স্বীকৃত ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর এমপিও আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো প্রাক-প্রাথমিক পদ সৃষ্টি এবং ইবতেদায়ী মাদ্রাসার জন্য আলাদা অধিদপ্তর স্থাপন।
এর আগে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রার চেষ্টা করলে পুলিশ প্রেস ক্লাবের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয়। সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে পুলিশ সদস্য ও শিক্ষকরা মুখোমুখি অবস্থানে ছিলেন। এ সময় জলকামান ও রায়ট কার রাখা হয়। পদযাত্রা আটকে দেওয়ায় প্রেস ক্লাব থেকে পল্টনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অবস্থানকারীরা অভিযোগ করেন, বছরের পর বছর ধরে সরকারের কাছে জাতীয়করণের দাবি জানানো হলেও এখন পর্যন্ত বাস্তব কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এতে শিক্ষকরা চরম অনিশ্চয়তা ও অর্থকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
শিক্ষক নেতারা জানান, দেশের হাজারো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসায় কর্মরত শিক্ষকরা মাসের পর মাস বিনা বেতনে কাজ করছেন। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান থেকে সামান্য সম্মানী পাওয়া যায়, যা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তারা বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং প্রাথমিক পর্যায়ে ইসলামী শিক্ষা সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও সরকারের অবহেলায় বারবার বঞ্চিত হচ্ছেন।
শিক্ষকরা আরও বলেন, বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। যদি এবারও জাতীয়করণের ঘোষণা না আসে, তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পর অনশন শুরু করবেন।
অবস্থানকারীরা জাতীয়করণের পাশাপাশি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার কাঠামো ও প্রশাসনিক স্বীকৃতি দ্রুত নিশ্চিত করার দাবি জানান, যাতে শিক্ষকরা ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা পান এবং প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে সমন্বয় ঘটানো যায়। তারা জানান, সরকার যদি দীর্ঘদিনের দাবি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত না নেন, তবে কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।