১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:৫০

এবারের শিক্ষক নিয়োগ অতীতের সব বদনামকে ঘোচাবে: ইবি উপাচার্য

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহকে স্মারকলিপি দিচ্ছেন ছাত্রদলের নেতারা  © টিডিসি

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, ‘ছাত্র হিসেবে মেধার ভিত্তিতে এখানে সবাই অংশগ্রহণ করছে। এখানে কে ছাত্রলীগ বা অন্য কোনো দলের সঙ্গে জড়িত কি না, সেটা তো দেখার বিষয় নয়। পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ তো সবাই পাবে। এটা জাস্ট একটা অভিযোগ আরকি। এবারের শিক্ষক নিয়োগ অতীতের সকল বদনামকে ঘোচাবে। ছাত্রদল যে এই নিয়োগ পরীক্ষাকে অবৈধ বলছে, এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। 

শুক্রবার (১০ আগস্ট) ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শেষে সাংবাদিকদের পরীক্ষা কথা বলেন তিনি।

এ সময় উপাচার্য বলেন, ‘আমরা লিখিত, মৌখিক ও একাডেমিক রেজাল্টে যারা সর্বোচ্চ মার্ক পাবে তাদের নিয়োগ দেব। নিয়োগে কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শকে প্রাধান্য দেওয়া হবে না। আশা করি যোগ্য শিক্ষকই নিয়োগ হবে।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘যেসব বিভাগের সভাপতিরা আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, তারা বোর্ডে থাকলেও সুবিধা করতে পারবে না। কারণ, এটি একটি সম্মিলিত প্রক্রিয়া।’

এদিকে সকাল সাড়ে ১০টায় ইবনে সিনা বিজ্ঞান ভবনের সামনে ফ্যাসিস্টমুক্ত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় ‘ফ্যাসিস্টদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’; ‘ফ্যাসিস্টযুক্ত নিয়োগ বোর্ড, মানি না মানব না’; ‘ছাত্রলীগ থাকবে যেখানে, জুলাই হবে সেখানে’; ‘নিয়োগ নিয়ে বাণিজ্য, মানিনা মানব না’; অবৈধ নিয়োগ, মানি না মানব না’সহ নানা ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, ‘গতকাল ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। যেখানে রাকিবুল নামের ছাত্রলীগের একজন চিহ্নিত কর্মী উপস্থিত ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের অর্থ ও অস্ত্রের জোগানদাতা ছিলেন। আমরা গতকাল রাতে তার উত্তীর্ণ হওয়ার রেজাল্ট দেখেছি এবং আমার মনে শিগগিরই ছাত্রলীগ পুনর্বাসন করা হবে। আজও ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাতেও ছাত্রলীগ রয়েছে বলে জেনেছি। আমরা প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। তারপরও প্রশাসন পরীক্ষা নিচ্ছে। প্রশাসন ছাত্রলীগ পুনর্বাসন করছে এবং ফ্যাসিজম কায়েম করছে।’

এদিকে একই দাবিতে এর আগে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে দলটি। এতে তারা বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার ( ৯ অক্টোবর) ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (লিখিত ও ভাইভা) হয়েছে। কিন্তু জুলাই গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী-ছাত্রলীগের দোসর রাকিবুল ইসলাম রাকিব নামের এক প্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে, যিনি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যেটা আমাদের জুলাই চেতনাকে আঘাত করে এবং জুলাই আন্দোলনে শহিদদের রক্তের সাথে বেঈমানির শামিল।’

স্মারকলিপিতে তারা আরও উল্লেখ করেন, ‘আজ ১০ অক্টোবর ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (লিখিত ও ভাইভা) অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যেখানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। আমরা ছাত্রদল কোনোভাবে জুলাই চেতনাকে বাধাগ্রস্ত করতে চাই না।’

স্মারকলিপি প্রদানকালে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদের নেতৃত্বে সেখানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, সদস্য রাফিজ আহমেদ, নূর উদ্দিন ও স্বাক্ষরসহ অন্য নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল ইসলাম ও শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট।