তারেক রহমানের আগমন ঘিরে শাহজালাল বিমানবন্দরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা
দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকেই বিমানবন্দর ও আশপাশের পুরো এলাকাকে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে, যা পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা বলবৎ থাকবে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)-এর নিজস্ব নিরাপত্তা ইউনিট এভসেকের পাশাপাশি বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র্যাব ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) যৌথভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বিমানবন্দর ও এর আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে।
বেবিচক সূত্র জানায়, বুধবার বিকাল থেকেই যাত্রী ছাড়া অন্যদের বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পুরো এলাকায় ড্রোন ওড়ানোর ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পোশাকধারী সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সাদা পোশাকে সার্বক্ষণিক নজরদারি চালাচ্ছেন।
বিমানবন্দর সূত্র অনুযায়ী, তারেক রহমানের অবতরণ থেকে শুরু করে বিমানবন্দর ত্যাগ করা পর্যন্ত অন্তত পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে। বিমানবন্দর গোলচত্বর, বেবিচক সদর দপ্তর, অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল এলাকা এবং আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ৯ নম্বর গেটসহ সব প্রবেশ ও বহির্গমন পথে কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে। নির্ধারিত এলাকার বাইরে বিমানবন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলাচলেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
বেবিচক মুখপাত্র কাওছার মাহমুদ জানান, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার সন্ধ্যা থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টা পুরো বিমানবন্দর এলাকা বহুমাত্রিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় থাকবে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগিব সামাদ বলেন, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে সামনে রেখে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পূর্ণমাত্রায় কার্যকর করা হয়েছে। এভসেক, বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র্যাব, আনসার ব্যাটালিয়ন ও ডিএমপির সদস্যরা সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সক্রিয় রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, তারেক রহমান বিমানবন্দরে অবতরণ থেকে বের হওয়া পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক নিরাপত্তা সদস্য দায়িত্বে থাকবেন।
এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অপারেশনাল কমান্ডার পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক জানান, বিমানবন্দরের ল্যান্ডসাইট এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ডগ স্কোয়াড ও কুইক রেসপন্স টিম (সিআরটি) সার্বক্ষণিক টহল দেবে। অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে দেশত্যাগের পর এই প্রথম তারেক রহমান দেশে ফিরছেন। তার প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সম্ভাব্য জনসমাগম ও নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় রেখেই এই বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।