০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:১৬

নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র জনগণ হতে দেবে না : নজরুল ইসলাম খান

‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান  © সংগৃহীত

নির্বাচনে নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র জনগন হতে দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ৭ দিনব্যাপী বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এই কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকে একটা জরিপের রিপোর্ট বের হয়েছে। সেখানে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, বেশি আসন এই নির্বাচনে কে পাবে? কোন দল? শতকরা ৬৬ ভাগ  উত্তরদাতা বলেছে বিএনপি। আর শতকরা ২৬ ভাগ উত্তরদাতা বলেছে জামায়াতে ইসলামী। ডিফারেন্স হলো ৪৪ ভাগ। আর অন্যান্য যারা তারা তো অনেক অনেক কম। এমনকি অনেক উল্লেখযোগ্য দল তারা শতকরা এক ভাগও না বা চেয়েও কম। 

তিনি বলেন, ‘এতে হতাশ হয়ে নিরাশ হয়ে কেউ ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিতেই পারে। কিন্তু যে জনগণ তাদের মন স্থির করে ফেলেছে তারাই ষড়যন্ত্রকে সফল হতে দেবে না… এটা মনে রাখতে হবে।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতন ও একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা… এই এক দফার আমরা অর্জন করেছি। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে বাকি অংশটুকু পূরণ করার জন্যই অন্তবর্তীকালীন সরকার। কিন্তু এই বাংলাদেশের জনগণ মাত্র কিছুদিন আগে ১৫ ধইরা সিন্দাবাদের দৈত্যের মতো ঘাড়ে চেপে বসা একটা নিপীড়নকারী একটা খুনি একটা ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করেছে।’

জনগণ কোনো ষড়যন্ত্র হতে দেবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনো ষড়যন্ত্র এই জনগণকে পরাজিত করতে পারেনি এবং পারবে না ইনশাআল্লাহ।’ ‘কোটিপতি বাড়বে, দরিদ্র বাড়বে, এটাকে উন্নয়ন বলে না’ মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা দেশে উন্নয়ন দেখেছি। বড় বড় দালানকোঠা, বড় বড় এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন ট্রেন ইত্যাদি। কিন্তু পাশাপাশি আমরা দেখেছি জনগণের মৌলিক ন্যূনতম আকাঙ্ক্ষাগুলো অপূর্ণ থেকে যেতে।’

আরও পড়ুন : নির্বাচন দেওয়ার শর্ত ছিল না, আমরাই বলেছি ‘হবে’: নৌ উপদেষ্টা

তিনি বলেন, ‘আমরা পত্রিকায় পড়েছি যে, কোটিপতি উৎপাদনের দেশ হিসাবে বাংলাদেশ শীর্ষে এ দেশে জনসংখ্যার অনুপাতে সবচেয়ে বেশি কোটিপতি হয় প্রতি বছর। অথচ আমরা এটাও পড়েছি যে, প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে চলে যায়। একদিকে কিছু মানুষ কোটিপতি হয়, আরেক দিকে লক্ষ লক্ষ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে পড়ে যায়। এই অবস্থা, এই অবস্থা গ্রহণযোগ্য না। এটাকে উন্নয়ন বলে না।’

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একজন রাজনীতিবিদ বলেছিলেন যে দেশের মানুষ বেকার উপার্জনহীন বুভুক্ষ, দরিদ্র সেই দেশে বড় বড় অট্টালিকা, বড় বড় রাস্তাঘাট, বড় বড় পুল-কালভার্ট এসব হলো গোরস্থানে আলোক সজ্জা করা। আপনি একটা গোরস্থানে আলোক সজ্জা করে দেখাতে পারেন বড় সুন্দর লাগছে। কিন্তু তার চারদিকে অন্ধকার। এটা উন্নয়ন না।’

তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে চাই আমরা। খালি বললেই তো হবে না যে, আমরা দেশের মানুষকে শিক্ষিত করতে চাই।  কীভাবে শিক্ষিত করবেন? আমরা দেশের মানুষের উপার্জন বাড়াতে চাই।  কীভাবে করবেন? আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই।  কীভাবে করবেন? আমরা নারীদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে চাই। কীভাবে করবেন? আমরা স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে চাই জনগণের জন্য কীভাবে?’

দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বিকেলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ‘দেশ গড়া পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।