খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় জার্মান বিএনপির দোয়া মাহফিল
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে জার্মান শাখা বিএনপি। একই সঙ্গে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জার্মান প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধনের কার্যক্রম সম্পন্ন করা এবং ভোট প্রদানের পদ্ধতি উপস্থাপন করা হয়।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) জার্মান শাখা বিএনপির উদ্যোগে ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরের সালবাউ ব্রনহাইম হলে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র এবং ঐক্যের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় এই দোয়া মাহফিল করা হয়।
জার্মান শাখা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রেজার সভাপতিত্বে এবং জার্মানি বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ হাবিবের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য দেওয়ান শফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন কাউসার শামীম।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আজ একটি বিশেষ ঐতিহাসিক দিন। ‘৯০ সালের এই দিনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্বে ছাত্র জনতার তীব্র আন্দোলনের ফলে অনেক রক্তের পিচ্ছিল পথ মাড়িয়ে স্বৈরাচার এরশাদের পতন হয়েছিল। কিন্তু যে গণতন্ত্রের জন্য খালেদা জিয়া লড়াই করেছিলেন সেই গণতন্ত্র আবার হরণ করে শেখ হাসিনা নামের এক দানব শাসক। জনগণ হারায় বাক ও ব্যক্তির স্বাধীনতা। কেড়ে নেয়া হয় মৌলিক অধিকার। পদদলিত করা হয় মানবাধিকার।
তারা বলেন, জোর পুর্বক ভুয়া ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে বিরোধীদলের রাজনীতিকদের নিধন আর ভিন্নমত দমন করে ক্ষমতার মসনদ পাকাপোক্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠে হাসিনা। আবার সেই গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে পথচলা ছিল অনেক কঠিন। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা তাকে শারীরিক মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেওয়ান শফিকুল ইসলাম বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আধিপত্যবাদী শক্তি ও স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ‘২৪এর আগস্টে ছাত্র জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে হাসিনা পালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু পালিয়ে গিয়েও তার প্রভুদের সহযোগিতায় দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই গণতন্ত্রকামী সকল দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের মত পার্থক্য থাকবে, মত মতভেদ থাকবে কিন্তু স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকব।
সভাপতির বক্তব্যে মাসুদ রেজা বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার জীবন যৌবন বিসর্জন দিয়েছেন বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের জন্য। স্বৈরাচার
শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার শিকার এই মহান নেত্রী আজ মৃত্যু শয্যায়। গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলনে সুদীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে ২৪এর ছাত্র জনতার তীব্র আন্দোলনে অসংখ্য লাশ আর রক্ত গঙ্গার ঢেউয়ের তীব্রতায় খুনী হাসিনা পালিয়ে গিয়েছে। দেশ রাহু মুক্ত হয়েছে। গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সুগম হয়েছে। ঠিক সেই মুহূর্তে গণতন্ত্রের নেত্রী চরম অসুস্থ। তার সুস্থতার জন্যে ধর্ম বর্ণ দল মত নির্বিশেষে সবাই একবৃত্তে এসে উপনিত হয়েছে। সবাই মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছেন তার সুস্থতার জন্য, দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে তার উপস্থিতি অপরিহার্য।
অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য দেন, মোজাম্মেল হক, সেলিম ব্যাপারী চঞ্চল, আনিসুর রহমান শামীম, জুয়েল খান, শাখাওয়াত হোসেন সোহাগ, আসিফ ইকবাল ভূঁইয়া, আল আমিন রিয়াজ, নিয়াজ প্রমুখ।