প্রতিদিন ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা সেই যুবদল নেতাকে বহিষ্কার
দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আওতাধীন যাত্রাবাড়ী থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মুশফিকুর রহমান ফাহিমকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।
আজ শনিবার (১২ জুলাই) যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়ার স্বাক্ষর করা দলীয় প্যাডে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বহিষ্কৃত নেতাদের কোনো ধরনের অপকর্মের দায়-দায়িত্ব দল নেবে না। যুবদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে বেইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়ামাত্রই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এককালীন পাঁচ কোটি টাকা বা মাসিক ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস পরিবহনের কোনো গাড়ি যাত্রবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে গেলেই ভাঙচুর এবং বাসচালক ও শ্রমিকদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল সাবেক যুবদল নেতা মুশফিকুর রহমান ফাহিমের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় শরীয়তপুর বাসস্ট্যান্ডে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলার সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ ও আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন শরীয়তপুর সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার ও আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চৌকিদার। এ সময় বাসমালিক ও শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শরীয়তপুর আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চৌকিদার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের কোনো বাস যাত্রাবাড়ী স্ট্যান্ডে ঢুকতে দেয়নি । বাস গেলেই দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই এলাকার যুবদল নেতা ফাহিমের লোকজন হামলা করছে। এতে দুই দিনে আমাদের অন্তত ২৫টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকজন বাসচালক ও শ্রমিক আহত হয়েছে। ফাহিম আমাদের কাছে এককালীন ৫ কোটি টাকা বা মাসিক ১০ লাখ করে টাকা দাবি করেছেন।’
শরীয়তপুর সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘পদ্মা সেতু হওয়ার পর আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বাস চালাতে পারছি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর যাত্রাবাড়ী এলাকার ফাহিম নামে এক যুবদল নেতা যাত্রাবাড়ী স্ট্যান্ড দখল ও মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। এত দিন তাকে প্রতিদিন ৩০ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে। এখন চাঁদার অঙ্ক বাড়িয়ে মাসে ১০ লাখ অথবা এককালীন ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করছে, যা আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব না।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যায় বিচার দাবি করছি।শরিয়তপুর জেলার পুলিশ নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা জানতে পেরেছি শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস নামের একটি পরিবহন যাত্রাবাড়ীতে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না এবং কতিপয় দুষ্কৃতকারী চাঁদাদাবি করেছে এবং বাসে ভাঙচুর করছে। আমরা ঘটনাটি জানার পর ডিএমপি’র সংশ্লিষ্ট ক্রাইম বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এবং চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাই। আমরা বিষয়টি নিয়ে ডিএমপি’র সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছি।