৩১ মে ২০২৫, ২০:১৩

নাহিদ ইসলামকে জড়িয়ে ক্লিকবেইট সংবাদ, এনসিপির প্রতিবাদ 

এনসিপির লোগো ও নাহিদ ইসলাম  © টিডিসি ফটো

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলামকে জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ জেরে ক্লিকবেইট ও শিকারি সাংবাদিকতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এনসিপি। শনিবার (৩১ মে) এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি- গতকাল কয়েকটি গণমাধ্যম সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলামকে জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এনসিপি এই ধরনের ক্লিকবেইট ও শিকারি সাংবাদিকতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। 

প্রতিবেদনে আতিক মোর্শেদকে মো. নাহিদ ইসলামের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা সঠিক নয়। মো. নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনকালে আতিক মোর্শেদ তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু তিনি বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফাইজ তাইয়্যেব আহমেদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন। 

এছাড়াও, গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এনসিপি আহ্বায়ক পরিষ্কার করেছেন যে, উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত থাকাবস্থায় ‘নগদ’ বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে ছিল। ফলে নগদ সংক্রান্ত ব্যাপারে তাঁকে জড়িয়ে এমন প্রতিবেদন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই প্রতিবেদন প্রকাশের পরপর কোনো রূপ যাচাই-বাছাই ব্যতীত একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের মিডিয়া সেল থেকেও অব্যাহত ভাবে এনসিপি এবং মো. নাহিদ ইসলামকে টার্গেট করে ‘ফটোকার্ড’ প্রকাশ করতে দেখেছি আমরা। যা গভীর উদ্বেগের ও শঙ্কাজনক। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা এমন এক রাজনৈতিক সংস্কৃতি নির্মাণ করতে চাই, যেখানে পারস্পরিক সমালোচনা হবে গঠনমূলক, যুক্তিনির্ভর ও বস্তুনিষ্ঠ। ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার প্রবণতা পারস্পরিক সম্মান ও আস্থা নষ্ট করে রাজনৈতিক অঙ্গনের পরিবেশ আবারও পূর্বের ন্যায় দ্বন্দ্বমুখর ও আক্রোশমূলক করে তুলতে পারে; যা সকল পক্ষেরই পরিহার করা উচিত বলে আমরা মনে করি। 

বিজ্ঞপ্তিতে এনসিপি উল্লিখিত গণমাধ্যমসমূহের কাছে অবিলম্বে বিভ্রান্তিকর তথ্যের সংশোধন এবং ভুল স্বীকার করে পেশাদার সাংবাদিকতার ন্যূনতম দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানায় । 

এতে আরো বলা হয়, একটি গণঅভ্যুত্থানের পরও বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো থেকে প্রত্যাশিত ভূমিকা আমরা দেখছি না। রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরের ন্যায় গণমাধ্যমেও পতিত ফ্যাসিবাদের তল্পিবাহকদের দেখা যাচ্ছে। খোদ অভ্যুত্থান ও শেখ হাসিনা কর্তৃক পরিচালিত গণহত্যাকেই নানা মহল বিতর্কিত এবং প্রশ্নসাপেক্ষ করার প্রয়াস চালাচ্ছে। 

এছাড়াও, গণমাধ্যমে পুরোনো কায়দায় রাজনৈতিক দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর থেকেই কিছু রাজনৈতিক পক্ষকে গণমাধ্যমের মালিকানা ও গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো দখলে তৎপর হতে দেখা গেছে। যাতে বিভিন্ন অলিগার্ক মাফিয়া মিডিয়া মালিকদের সংশ্লিষ্টতাও স্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ও নিরপেক্ষতাকে সংকুচিত করে। 

আমরা হতাশার সাথে লক্ষ করছি- গণমাধ্যমের মালিকানা ও পদের হাতবদল হয়েছে শুধু; গুণগত কোনো পরিবর্তন আসেনি। এই দুরবস্থা নিরসনে অনতিবিলম্বে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সংস্কার প্রতিবেদন বাস্তবায়ন করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি। পাশাপাশি, গণমাধ্যমের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয়করণের মাধ্যমে যারা এক-এগারোর পুনরাবৃত্তির চেষ্টা করছেন, চব্বিশের অভ্যুত্থানে প্রতিফলিত গণ সার্বভৌমত্বের অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে তাদেরকে মোকাবেলা করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি আমরা।