১৬ আগস্ট ২০২৫, ০৮:১৪

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-পুতিন শীর্ষ বৈঠকেও হয়নি কোনো চুক্তি

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন  © সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যকার রুদ্ধদ্বার বৈঠক প্রায় তিন ঘণ্টা পর শেষ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের স্থানীয় শুক্রবার সময় বেলা সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত দেড়টা) এলমেনডর্ফ–রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটিতে ট্রাম্প–পুতিন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক শেষে রাশিয়ার মন্ত্রীরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে থাকলেও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে কোনো ধরনের চুক্তি হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

যৌথ সংবাদ সম্মেলেনে প্রথমে কথা বলেন পুতিন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া মহাসাগর দ্বারা আলাদা হলেও তারা খুব কাছের প্রতিবেশী। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ব্যবধান মাত্র চার কিলোমিটারের (এখানে আলাস্কার ছোট কোনো দ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার নিটকতম জলসীমার কথা বোঝানো হয়েছে)। আমরা অত্যন্ত কাছের প্রতিবেশী। এটিই বাস্তবতা।’

এ কারণে আলাস্কার এলমেনডর্ফ–রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটির টারমাকে দুজনের মধ্যে করমর্দনের সময় ট্রাম্পকে ‘হ্যালো, প্রতিবেশী’ বলে সম্বোধন করেছেন বলেও জানান পুতিন।

সংবাদ সম্মেলেন পুতিন আলাস্কার ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আলাস্কা একসময় রাশিয়ার অংশ ছিল, যা ১৮০০-এর মাঝামাঝি দশকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করা হয়। আলাস্কায় এখনো রাশিয়ান ‘অর্থোডক্স চার্চ’ রয়েছে। তিনি মনে করেন, এই ঐতিহ্য পরস্পরের জন্য উপকারী এবং ন্যায্য সম্পর্ক পুনর্নির্মাণে সাহায্য করতে পারে। তিনি মনে করেন, এই ঐতিহ্য পরস্পরের জন্য উপকারী এবং ন্যায্য সম্পর্ক পুনর্নির্মাণে সাহায্য করতে পারে।

এরপর পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পটভূমি তুলে ধরেন। তার দেশ কেন এই সংঘাতে জড়িয়েছে, সেই যুক্তিও উপস্থাপন করেন।

এদিকে, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুতিনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের মূল্যায়ন করতে বললে ট্রাম্প জবাব দেন, ‘১০–এ ১০।’ তিনি বলেন, ‘আলোচনায় আমাদের মধ্যে দারুণ মিল ছিল।’ আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে বলে জানান তিনি।

ট্রাম্প বলেন, ‘অনেক, অনেক বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। বেশিরভাগ বিষয়ে একমত। তবে কিছু বিষয়ে হতে পারিনি। কিন্তু আমাদের অগ্রগতি হয়েছে। তবে চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো চুক্তি নেই। আমি স্বল্প সময়ে ন্যাটোকে, যারা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট তাদের এবং অবশ্যই ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আজকের বৈঠকের ব্যাপারে অবহিত করব।

তিনি আরও বলেন, এখন ইউরোপের দেশগুলোকে সম্পৃক্ত করে একটি চূড়ান্ত চুক্তি করার দায়িত্ব জেলেনস্কির (ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট)। আগামীতে রাশিয়া ও ইউক্রেন সরাসরি আলোচনায় বসবে। সেই আলোচনায় পুতিন ও জেলেনস্কিদুজনেই থাকবেন।

জানা গেছে, রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ট্রাম্পের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের রাশিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ছিলেন। অপরপক্ষে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং রুশ প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ ছিলেন।