১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০১

শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া পর্যায়ক্রমে বাড়বে, তবে তারা কীভাবে এমপিও পেয়েছে সেটাও দেখতে হবে

ইনসেটে আজাদ মজুমদার  © সংগৃহীত ও সম্পাদিত

মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতার দাবিতে ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। এরই মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তি শিক্ষকদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। এবার এ নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি সেক্রেটারি আজাদ মজুমদার। শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া পর্যায়ক্রমে বাড়বে, তবে তারা কীভাবে এমপিও পেয়েছে সেটাও দেখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

আজ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) নিজের সকাল ১০টার পরে ফেসবুক একাউন্টে এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করছেন। তাদের এই দাবি অনেকটাই ন্যায্য। আমি গ্রামে বড় হয়েছি। গ্রামের স্কুলে লেখাপড়া করেছি। শিক্ষকদের কষ্ট নিজের চোখে দেখেছি। তাদের বাড়ি ভাড়ার দাবি পূরণ করা গেলে সেটা সব দিক থেকে সবার জন্য আনন্দদায়ক হবে। তবে এই দাবি আদায় করতে গিয়ে শিক্ষকরা যদি জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেন সেটা হবে দুঃখজনক।’ 

তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে তাদের দাবিগুলো বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের বাড়িভাড়া কীভাবে বৃদ্ধি করা যায় এই বিষয়ে সরকার কাজ করছে। আপাতত পাঁচ শতাংশ বাড়িভাড়া বাড়ানো কথা বলা হয়েছে। আগামী বাজেটের আগে আরো পাঁচ শতাংশ যাতে বাড়ানো যায় সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। কিন্তু শিক্ষকদের অনেকেই চাইছেন সরকার এখনই যেন তাদের দাবিগুলো মেনে নেয়। এটা কতটা বাস্তবসম্মত তা বিবেচনার দাবি রাখে।’

আরও পড়ুন: রাকসুতে ভিপি-এজিএস শিবিরের জাহিদ-সালমান, জিএস সাবেক সমন্বয়ক আম্মার

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার পাঁচ শতাংশ বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দিলেও বলেছে ন্যূনতম বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি হবে ২,০০০ টাকা। এর ফলে যাদের বেতন স্কেল ২০ হাজার টাকার কম তাদের বাড়িভাড়া মূলত দশ শতাংশই বাড়বে। যতদূর জানি অধিকাংশ শিক্ষকের মূল বেতনই ২০ হাজার টাকার কম। সুতরাং তাদের দাবির একটা বড় অংশ এতেই পূরণ হয়ে যাচ্ছে।’

প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি সেক্রেটারি আরও বলেন, ‘যে-সব স্কুল এমপিওভুক্তির সব শর্ত পূরণ করেছে তাদের শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি সরকার অবশ্যই বিবেচনায় রাখবে। কিন্তু আমাদের এটাও ভেবে দেখতে হবে এমপিওভুক্ত হয়েছে কারা? বছরের পর বছর রাজনৈতিক বিবেচনায়, তদবিরের জোরে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। ছাত্র-শিক্ষক থাকুক না থাকুক, তারা এমপিওভুক্ত হয়েছে। কোনো রকম একটা ছাপড়ি ঘর হলেই হলো।’

আজাদ মজুমদার বলেন, ‘সাম্প্রতিক পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলগুলোতেও এর প্রতিফলন দেখা গেছে। গতকাল প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে ২০০'র অধিক কলেজে কেউ পাস করেনি। এসএসসিতেও মোটামুটি একই হাল। এখন, যাদের শিক্ষার এই হাল, তাদেরকে কেন জনগণের করে বাড়তি অর্থ দেওয়া হবে? এমপিওভুক্ত স্কুলগুলো সরকার নির্ধারিত ক্রাইটেরিয়া মেনে এমপিওভুক্ত হয়েছে কিনা সেই বিষয়টি তাই তদন্ত করে দেখার এখন সময় এসেছে। ক্রাইটেরিয়া মানার ধারের কাছে নেই। ফলাফলেরও অবস্থা তথৈবচ। এমন সব স্কুলকে, স্কুলের শিক্ষককে কেন বাড়তি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে সেটা ভেবে দেখার অবকাশ আছে।’