২৭ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫৫

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে যা বললেন প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্ট  © টিডিসি সম্পাদিত

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধানের পথে হাঁটতে চায় না আপিল বিভাগ। বরং নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থাকে ঘিরে একটি কার্যকর ও সুদূরপ্রসারী সমাধান চায় সর্বোচ্চ আদালত— এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না আপিল বিভাগ। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কার্যকর সমাধান চায় আপিল বিভাগ। যাতে এটি বারবার বিঘ্নিত না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটিই করা হবে।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে আবেদনের পক্ষে অংশ নেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট মো. শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

এর আগে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) চারটি রিভিউ আবেদনের ওপর প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি এই চারটি আবেদন শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হলেও তা মুলতবি করেন আপিল বিভাগের তৎকালীন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ সংশোধনী বৈধ ঘোষণা করে রিট খারিজ করে দেয়।

পরবর্তীতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেওয়া হলে, ২০০৫ সালে আবেদনকারীরা আপিল করেন। ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন।

রায় ঘোষণার পর একই বছরের ৩০ জুন সংসদে পাস হয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী, যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়। ৩ জুলাই সংশ্লিষ্ট গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে তা কার্যকর করা হয়।

সরকার পরিবর্তনের পর ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট এ রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি— তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভুঁইয়া ও জাহরা রহমান।

এছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৬ অক্টোবর এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ২৩ অক্টোবর পৃথকভাবে রিভিউ আবেদন করেন। একইভাবে নওগাঁর রানীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও গত বছর একটি আবেদন দাখিল করেন।