পিরিয়ডের কারণে ছুটি চেয়েছিল ছাত্রী, প্যান্ট খুলে প্রমাণ দেখানোর নির্দেশ চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে!
চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এক ছাত্রী তার পিরিয়ড চলাকালীন যন্ত্রণা এবং প্রবল অস্বস্তির কারণে ছুটির আবেদন করেছিল কর্তৃপক্ষের কাছে আর তার সেই ছুটি মঞ্জুর করার আগে পিরিয়ডের প্রমাণ হিসেবে তাকে প্যান্ট খুলতে বাধ্য করানো হয়। আর এভাবে তার ছুটির কারণের প্রমাণ দেখতে চাওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বেইজিং ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির গেংডান ইনস্টিটিউটে ঘটেছে এই ঘটনা। এই ছাত্রীর অভিযোগ জানানোর পরে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন চরম নিন্দার মুখে। এই ছাত্রী জানিয়েছিল, পিরিয়ড চলাকালীন তার অস্বস্তি হচ্ছে, যন্ত্রণাও হচ্ছে আর তাই অসুস্থতার খাতিরে ছুটি চেয়েছিল। কিন্তু তাকে তার এই অবস্থার প্রমাণ দেখাতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে।
গত ১৫ মে সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে সেই ছাত্রী প্রকাশ্যে দাবি করেন, তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ক্লিনিক তাকে তার প্যান্ট খুলতে বাধ্য করিয়েছিল, যাতে বোঝা যায় যে আদৌ তার পিরিয়ড চলছে কিনা। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সংবাদপত্র এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
ভিডিওতে ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মীকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, পিরিয়ড চলছে কিনা তা জানার জন্য এই ধরনের পরীক্ষা কি সবার সঙ্গেই করা হয়? সেই কর্মী তাকে জানান, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি। কিন্তু নিজের কথার সাপেক্ষে কোনও লিখিত প্রমাণ বা বিবৃতি তিনি দেননি। সেই মহিলা কর্মী জানান, এটা আমার ব্যক্তিগত কোনও নিয়ম নয়, এটা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম।
কোনো হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে সেই ছাত্রীকে পরীক্ষা করানোর বদলে সেই কর্মী ছাত্রীকে জানান, এই ক্যাম্পাসের মধ্যেই পিরিয়ডের পরীক্ষা না হলে ছুটির আবেদন মঞ্জুর করা যাবে না। পরে সেই ছাত্রী সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরও একটি ভিডিও শেয়ার করেন এবং সেখানে দেখা যায়, তিনি হাসপাতালে গিয়ে যথাযথ পেপার ওয়ার্ক করেন। তিনি ভিডিওতে বলেন, আমি শুধু চাইছিলাম মহিলারা তাদের পিরিয়ডের সময় কীভাবে ন্যায্য ছুটি চাইতে পারেন তার জন্য একটি বিবেচ্য নীতিমালা তৈরি করা হোক।
পরে ১৬ মে একটি বিবৃতিতে সেই প্রতিষ্ঠান দাবি করেছে যে মেডিকেল প্রক্রিয়া সঠিকভাবে মেনে চলা হয়েছে এবং কোনও খারাপ কাজ করা হয়নি। এমনকি সেই প্রতিষ্ঠানের তরফে এও জানানো হয়েছে যে তারা ছাত্রীর করা সেই ভিডিওর বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করবেন। কারণ ভিডিওতে সত্যের অপলাপ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে এও জানানো হয় যে তাদের কর্মীরা ছাত্রীর শারীরিক অবস্থার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন, তারপর আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে তার অনুমতি নিয়েই, কোনও সরঞ্জাম বা ফিজিক্যাল পরীক্ষা করা হয়নি।
জু নামে এই প্রতিষ্ঠানের এক কর্মী জানান, এই নিয়ম মূলত বানানো হয়েছে অসুস্থতার ছুটির যাতে অপব্যবহার না করা হয়। কারণ সেই প্রতিষ্ঠানে এর আগে অনেক ছাত্রী মিথ্যে পিরিয়ডের অজুহাত দিয়ে এই ছুটির আবেদন করেছিলেন।