বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ, প্যাকেটের গায়ে ৭৫% সতর্কবাণীর প্রস্তাব রেখে অধ্যাদেশ অনুমোদন
দেশে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে সরকার। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ শীর্ষক এই অধ্যাদেশ অনুমোদন দেওয়া হয়।
অধ্যাদেশে সম্প্রতি আলোচনায় আসা নিকোটিন পাউচকেও তামাকজাত দ্রব্যের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের পাশাপাশি সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সাথে বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শনও নিষিদ্ধ হয়েছে।
বিকেলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তামাক ব্যবহার ক্যান্সারসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে বাংলাদেশে প্রতিবছর এক লক্ষ ত্রিশ হাজারেরও বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে। দেশে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিদ্যমান ‘ধূমপান ওতামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫’ আরও শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রস্তাবিত ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ আজ অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। অধ্যাদেশ জারির লক্ষ্যে অবিলম্বে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং গ্রহণ করতে হবে।
অধ্যাদেশে সংশোধিত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সিদ্ধান্ত হল— ইমার্জিং টোব্যাকো প্রডাক্টস, যেমন ই-সিগারেট বা ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম (ইএনডিএস), হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্ট (এইচটিপি) ইত্যাদির ব্যবহার, উৎপাদন ও বিপণন নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে, ‘তামাকজাত দ্রব্য’-এর সংজ্ঞার আওতায় নিকোটিন পাউচ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের পাশাপাশি সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে, একই সঙ্গে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান রাখার বিধান সরকারের নির্দেশনার শর্তাধীন করা হয়েছে।
এ ছাড়া ‘পাবলিক প্লেস’ ও ‘পাবলিক পরিবহনে’-এর সংজ্ঞা ও অধিক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শনসহ ইন্টারনেট বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে তামাকজাত দ্রব্যের সকল প্রকার বিজ্ঞাপন, প্রচার ও প্রসার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সাথে তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটের গায়ে বিদ্যমান ৫০ শতাংশের পরিবর্তে ৭৫ শতাংশ এলাকা জুড়ে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সতর্কবাণী মুদ্রণের বিধান সংযোজন করা হয়েছে।