২৫ মে ২০২৫, ১৮:৪৫

সরকারি পলিটেকনিকে অবকাঠামোগত উন্নয়নে ২ হাজার কোটি টাকার বাজেট পাস

একনেক   © সংগৃহীত

সরকার ১৫টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আটটি ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ভবন নির্মাণে দুটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যার আনুমানিক ব্যয় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। এসব প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন পেয়েছে, যেখানে মোট ১১ হাজার ৮৫১ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

এই ব্যয়ের মধ্যে সরকার অর্থায়ন করবে ৮ হাজার ৪৬ কোটি ৯ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ থেকে আসবে ২ হাজার ৯৮৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন হবে ৮১৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। গতকাল শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভা সূত্রে জানা গেছে, সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ (প্রথম পর্যায়) শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫১৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত। এতে ১৯৫১ থেকে ১৯৮৫ সালের মধ্যে স্থাপিত ১৩টি এবং ২০০৬ ও ২০০৮ সালে স্থাপিত দুটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় আসবে।

এই প্রকল্পে ১৪টি ১০ তলাবিশিষ্ট একাডেমিক কাম ওয়ার্কশপ ভবন, তিনটি পাঁচতলাবিশিষ্ট অডিটোরিয়াম কাম লাইব্রেরি ভবন, দুটি কম্পিউটার ও ওয়ার্কশপ ভবনের উঁচু সম্প্রসারণ, একটি অডিটোরিয়াম আধুনিকায়ন এবং পাঁচটি পুরোনো ভবন অপসারণ করা হবে। পাশাপাশি নির্মাণ করা হবে ১২টি পাঁচতলাবিশিষ্ট ছাত্রী হোস্টেল, একটি ছাত্রাবাস, একটি ১০ তলা শিক্ষক কোয়ার্টার, একটি ১০ তলা স্টাফ কোয়ার্টার, চারটি ১০ তলা শিক্ষক ও কর্মচারী কোয়ার্টার, আটটি পাঁচতলা শিক্ষক ডরমিটরি এবং সাতটি পাঁচতলা স্টাফ ডরমিটরি।

অন্যদিকে, সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে একাডেমিক ভবন নির্মাণ (অতিরিক্ত প্রয়োজন) শীর্ষক আরেকটি প্রকল্পও অনুমোদন পেয়েছে। ৪৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হবে।

একনেক সভায় আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘আরবান ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯০ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং ‘স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্পের ব্যয় ৭২ কোটি ৬০ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরও একটি প্রকল্প—‘তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজসমূহের উন্নয়ন (তৃতীয় সংশোধন)’—এর ব্যয় ১৮৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা কমানো হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ‘নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (অষ্টম পর্যায়)’ প্রকল্পের ব্যয় ৪ হাজার ৬৪৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

এ ছাড়া প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ‘রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইনফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট (আরএআইএসই): রিইনট্রিগ্রেশন অ্যাকট অব রিটার্নিং মাইগ্র্যান্টস (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্পের ব্যয় ৯১ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘গ্রিড পাওয়ার ইভাকুয়েশন সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট ফর ওজোপাডিকো’ প্রকল্পে ৫৩৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা এবং ‘পাওয়ার ট্রান্সমিশন স্ট্রেংদেনিং অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন অব রিনিউঅ্যাবল এনার্জি’ প্রকল্পে ৪ হাজার ১৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। পাশাপাশি ‘ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার পুনর্নির্মাণ (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়েছে।

সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ছাড়াও আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ একনেক সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।