শিক্ষার্থীদের দাবিতে বড় সংস্কার উদ্যোগ, রুয়েটে নতুন ছয় স্টল চালু হচ্ছে ১ জানুয়ারি
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) শিক্ষার্থীদের বহুদিনের খাবার সংকট ও প্রিন্ট–স্টেশনারি সমস্যার সমাধানে আসছে বড় পরিবর্তন। ক্যাম্পাসে আধুনিক ফুডকোর্ট গড়ে তোলা, সাশ্রয়ী ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করা এবং সহজলভ্য সেবা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নতুন ছয়টি স্টল চালু করছে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকায় স্থাপিত এসব স্টল দুই বছরের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা করবে, যা শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন প্রয়োজন উল্লেখযোগ্যভাবে সহজ করবে বলে আশা করছে রুয়েট প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা।
প্রশাসনের বরাদ্দ তালিকায় দেখা যায়, সেলিম হলের সামনে প্রিন্ট ও স্টেশনারি সেবার জন্য অনুমোদন পেয়েছে ‘সারা কম্পিউটার্স’। দীর্ঘদিন ধরে প্রিন্ট–ফটোকপির জন্য শিক্ষার্থীদের যে ভোগান্তি পোহাতে হতো, এই নতুন স্টল চালু হলে সেই ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হবে বলে ছাত্রছাত্রীদের আশা।
অন্যদিকে খাবারের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান নতুনভাবে অনুমোদন পেয়েছে। সেলিম হলের সামনের ক্যান্টিন ভবনে ‘বাংলা টিফিন’ এবং ভবনের পাশেই ‘সাগর টি স্টল অ্যান্ড জুস বার’ স্টল স্থাপনের অনুমতি পেয়েছে। বাংলা টিফিনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনের সাশ্রয়ী রুটিন খাবার পাবেন, আর সাগর টি স্টল সরবরাহ করবে চা–কফি, জুসসহ হালকা নাস্তা। এ ছাড়াও ক্যাফেটেরিয়া সংস্কারের অংশ হিসেবে সেখানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ‘রাজশাহী ইনন’–কে, যারা রেস্টুরেন্ট–মানের খাবার পরিবেশন করবে।
বেলতলা এলাকায়, যা বর্তমানে শিক্ষার্থীদের অন্যতম আড্ডাস্থল—বরাদ্দ পেয়েছে আরও দুটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ‘চারু আড্ডা’ ফাস্টফুডের জন্য এবং ‘লাইভ বাইট বেকারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড’ বেকারি ও ফাস্টফুড সেবার দায়িত্ব পাবে। এসব স্টল চালু হলে বেলতলা এলাকার দীর্ঘদিনের খাবার–সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে শিক্ষার্থীরা আরও বৈচিত্র্যময় ও মানসম্মত খাবার উপভোগ করতে পারবেন।
ফুডকোর্ট সংস্কারের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছে। প্রশাসনের নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার প্রস্তুত ও সংরক্ষণের দায়ে একটি স্টলকে জরিমানা করা হয়। প্রশাসন জানিয়েছে, রান্নাঘরের পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা, নিরাপদ পানি ব্যবহার, খাবার সংরক্ষণ এবং কর্মীদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি—এসব বিষয় কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
রুয়েট শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, নতুন এসব স্টল চালু ও ফুডকোর্ট আধুনিকায়নের ফলে বহুদিনের খাবার সংকট ও স্টেশনারি সেবার অসুবিধা অনেকটাই দূর হবে। অন্যদিকে প্রশাসন জানায়, বড় পরিসরে ক্যাম্পাস সংস্কারের এই উদ্যোগ রুয়েটে একটি আধুনিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।