০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০১

বাংলাদেশে আসছে পেপাল?

গ্লোবাল পেমেন্ট সার্ভিস পেপাল  © সংগৃহীত

গ্লোবাল পেমেন্ট সার্ভিস পেপাল খুব শিগগিরই বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করতে চায়, এটি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্ত করতে বড় ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহ্সান এইচ মনসুর। 

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও চ্যানেল আই আয়োজিত ‘অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

গভর্নর বলেন, আন্তর্জাতিক ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম পেপাল বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী। পেপাল চালু হলে দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সহজে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন এবং তাদের পেমেন্টও দ্রুত গ্রহণ করতে পারবেন। তিনি জানান, ছোট উদ্যোক্তারা ব্যাংকের এলসি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ছোট চালান পাঠাতে পারেন না। তবে এই নতুন আন্তর্জাতিক পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তারা ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে সহজে পণ্য পাঠাতে পারবেন।

আরও পড়ুন: ম্যানেজিং কমিটি থেকে রাজনীতিবিদরা ‘আউট’, সরকারি কর্মকর্তাদের ‘ইন’ শুরু

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এমন প্ল্যাটফর্ম না থাকায় আউটসোর্সিং খাতের অনেকেই আন্তর্জাতিক বাজার থেকে পেমেন্ট পেতে সমস্যায় পড়েন। অনেক ক্ষেত্রে তারা কোনো পেমেন্টই পান না।

পেপাল একটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা অনলাইনে টাকা পাঠানো-গ্রহণ, বিল পরিশোধ এবং আন্তর্জাতিক কেনাকাটা করতে পারেন। ব্যবহারকারীর ব্যাংক বা কার্ডের সঙ্গে নিরাপদভাবে যুক্ত হয়ে এটি দ্রুত লেনদেন সম্পন্ন করে। পাশাপাশি এতে ক্রেতা-বিক্রেতার সুরক্ষা এবং রিফান্ড সুবিধাও রয়েছে। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং, অনলাইন ব্যবসা এবং আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ব্যবস্থায় বিশ্বের ২০০টিরও বেশি দেশে পেপাল ব্যবহৃত হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও চ্যানেল আই কৃষিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য আট ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করে। ৫০০টির বেশি আবেদন যাচাই করে বিজয়ীদের চূড়ান্ত করা হয়।

নগদ লেনদেন বিষয়ে গভর্নর বলেন, দেশে দুর্নীতির মূল জায়গা হলো নগদ লেনদেন। বর্তমানে বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা নগদ লেনদেন ব্যবস্থাপনায় খরচ হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা ধীরে ধীরে নগদ লেনদেন কমাতে চাই।’

কৃষি ঋণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে কৃষি ঋণের পরিমাণ দেশের মোট ঋণের দুই শতাংশ। তবে কৃষির উন্নয়নে এটি ১০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। তিনি জানান, এসএমই খাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৫ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল রয়েছে, কিন্তু ব্যাংকগুলোর সক্ষমতার ঘাটতির কারণে এই অর্থ বিতরণে সমস্যা হচ্ছে।’

খাদ্যশস্য উৎপাদনের অগ্রগতি তুলে ধরে গভর্নর বলেন, ‘১৯৭১ সালে দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল ১.৩ কোটি টন, যা এখন প্রায় ৪ কোটি টনে পৌঁছেছে তিন গুণেরও বেশি বৃদ্ধি। 

তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যা দ্বিগুণের একটু বেশি বেড়েছে, কিন্তু উৎপাদন বেড়েছে তিনগুণের বেশি—এই অর্জনকে খাটো করে দেখা যাবে না।’ 

তথ্যসূত্র: টিবিএস