২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:৩০

হাদি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১০ দিনের মধ্যে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী  © সংগৃহীত

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ১০ দিনের মধ্যে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কোর কমিটির সভা শেষে এ তথ্য জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। আপনারা জানেন, এর প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংখ্যা নিবিড় ও সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এবং প্রকৃত অপরাধী ও মদদকারীদের শনাক্তের জন্য এখনই সবকিছু প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তদন্তের স্বার্থে যে অংশটুকু জনসমক্ষে প্রকাশ সম্ভব, তা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।

তিনি বলেন, মামলা চলাকালীন এযাবৎ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন– ঘটনার মূলহোতা ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা হুমায়ুন কবির, মা হাসি বেগম, স্ত্রী শাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু, গার্লফ্রেন্ড মারিয়া আক্তার লিমা, মো. কবির, নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, সিবিয়ন দিও, সঞ্জয় চিসিম, মো. আমিনুল ইসলাম রাজু, মো. আব্দুল হান্নান। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৬ জন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে এবং ৪ জন সাক্ষীও ১৬৪ ধারায় সাক্ষ্য দিয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জব্দ করা উল্লেখযোগ্য আলামতগুলো হলো– হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি বিদেশি পিস্তল, ৫২ রাউন্ড গুলি, ম্যাগাজিন ও ছোরা; হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও ভুয়া নম্বর প্লেট; ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত গুলির খোসা, বুলেট, সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য আলামত এবং প্রায় ৫৩টি অ্যাকাউন্টের মোট ২১৮ কোটি টাকার স্বাক্ষরিত চেক। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলার অগ্রগতি বিষয়ে আজ বেলা ১১টায় ডিএমপি একটি প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত জানিয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা জড়িত রয়েছে তা উদঘাটনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। 

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য, সাক্ষীদের জবানবন্দি, উদ্ধার করা আলামত পর্যালোচনা ও সার্বিক বিবেচনায় মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে (৭ জানুয়ারি ২০২৬) এ মামলার চার্জশিট দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছি। আমি সবাইকে এ বিষয়ে ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ করছি। আমরা অতি দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য এবং যারা এর পেছনে জড়িত রয়েছে তাদের নাম, ঠিকানাসহ পূর্ণাঙ্গ তালিকা জনসম্মুখে উন্মোচন করতে পারব ইনশাআল্লাহ। আপনারা জানেন, ইতোমধ্যে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দ্রুততার সঙ্গে ন্যায়বিচার নিশ্চিতে আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এ কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে ফ্যাসিস্টের দোসর, দুষ্কৃতকারী ও সন্ত্রাসীরা অনবরত তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সেজন্য সবাইকে অনুরোধ করব, আমরা যেন এমন কোনো কাজ না করি, যা আমাদের শত্রুপক্ষকে শক্তিশালী করবে এবং হাদি হত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই হাদি হত্যার বিচার সম্পন্ন করা হবে ইনশাআল্লাহ।