পুরনো মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরেই শুরু হয় আয়েশার সন্ধান
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুনের মামলায় ৬০ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার হন গৃহকর্মী আয়েশা। প্রাথমিকভাবে তার নাম-ঠিকানা ও পরিচয় ছিল অজ্ঞাত। তবে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ ঠিকই তাকে গ্রেপ্তার করে। কীভাবে গৃহকর্মী আয়েশার ঠিকানা খুঁজে পায় এবং গ্রেপ্তার করে তা জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে অতিরিক্ত কমিশনার এন এস নজরুল ইসলাম এই তথ্য জানান।
পুলিশ জানিয়েছে, মোহাম্মদপুর থানার অতীতের বিভিন্ন মামলা ও জিডির তথ্য বিশ্লেষণ করে আয়েশাকে শনাক্ত করা হয়। পরে ম্যানুয়াল সোর্স ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়| বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে অতিরিক্ত কমিশনার এন এস নজরুল ইসলাম এই তথ্য জানান।
নজরুল ইসলাম জানান, গত ৮ ডিসেম্বর সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের ভেতরে মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় ৩ দিন আগে কাজে যোগ দেওয়া গৃহকর্মী ‘আয়েশা’কে দায়ী করে মামলা করেন নিহতের স্বামী আজিজুল ইসলাম (৫৭)।
এই ঘটনায় আয়েশাকে সন্দেহ করা হলেও বড় চ্যালেঞ্জ ছিল গৃহকর্মী আয়েশার কোনো ছবি, এনআইডি, মোবাইল নম্বর বা পরিচয় সংরক্ষিত না থাকা। সিসিটিভির ফুটেজেও তাকে চেনার মতো কোনো স্পষ্ট ভিজ্যুয়াল পাওয়া যায়নি, কারণ সে প্রতিবারই বোরকা পরে, মুখ ঢেকে আসা যাওয়া করতো।
তিনি জানান, ঘটনার আশেপাশে কোনো ডিজিটাল ক্লু না পেয়ে তদন্ত দল ‘ম্যানুয়াল’ উপায়ে থানায় গত এক বছরের গৃহকর্মী কর্তৃক সংঘটিত চুরির ঘটনাগুলো খুঁজতে থাকে। তদন্তকারীরা বিশেষভাবে লক্ষ্য করেন গলায় পোড়া দাগ, জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় বাস, গৃহকর্মীর পরিচয়ে সংঘটিত পূর্বের চুরি তথ্য নিয়ে মাঠে নামে তদন্তকারীরা। এখানে আয়েশার তথ্য মিলে যায়। হুমায়ুন রোডে ভুক্তভোগী পরিবার থেকে একটি পুরনো মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়, যা থেকেই শুরু হয় আসামির সন্ধান।
সিডিআরের বিশ্লেষণে পাওয়া অবস্থান ধরে হেমায়েতপুরে গিয়ে জানা যায় নম্বরটি ব্যবহার করত রাব্বি নামের এক ব্যক্তি। তদন্তে বেরিয়ে আসে রাব্বির স্ত্রীই হলো সেই আয়েশা। তারা পূর্বে জেনেভা ক্যাম্পে থাকত বাদীর দেওয়া বর্ণনার সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যায়। পরবর্তীতে হেমায়েতপুরে অভিযান চালানো হলে দরজা তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। পরে পরিবারের সদস্যদের তথ্যের ভিত্তিতে আশুলিয়া, বরিশাল, পটুয়াখালীসহ কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। অবশেষে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার চরকায়া গ্রামে তার দাদা শশুর বাড়ি থেকে আয়েশা ও তার স্বামী রাব্বিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় আয়েশার কাছ থেকে একটি চুরি করা ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়|