টুঙ্গিপাড়ায় দুই গ্রাম পুলিশকে পেটানোর অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে, থানায় মামলা
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় মাদক ব্যবসায়ী আটকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রাম পুলিশকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনার পর পুলিশ বুধবার রাতে বিএনপি নেতা জীবেশ বাড়ৈকে প্রধান আসামি করে চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও সাতজনকে আসামি করে মামলা করেছে।
আসামিরা হলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জীবেশ বাড়ৈ, ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নয়ন বাইন, হৃদয় তালুকদার ভোলা ও অয়ন বাইন।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকেলে পাটগাতী ইউনিয়নের ১ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ কৃপা মন্ডল ও সুরজিত ঘরামী বিশেষ কাজে গোপালপুর যায়। ফেরার পথে তারা থানার এসআই মোসলেম আলীকে জানান জোয়ারিয়া এলাকায় ইয়াবা ট্যাবলেট বেচাকেনা চলছে। তখন থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাদক ব্যবসায়ী বিজন বিশ্বাসকে ১৪টি ইয়াবাসহ আটক করে। ঘটনাস্থলে থাকা অন্য তিনজন মাদক ব্যবসায়ী দৌড়ে পালিয়ে যান। তখন আটক বিজনকে নিয়ে থানায় রওনা দিলে গ্রাম পুলিশ দুজন পুলিশের পেছনে আসেন। কিছু দূর যাওয়ার পর বিএনপি নেতা জীবেশ বাড়ৈর নেতৃত্বে ১০-১২ জন লোক দুই গ্রাম পুলিশের গতিরোধ করেন। তখন পুলিশকে মাদকের খবর দিয়ে বিজনকে কেন গ্রেপ্তার করাল বলে বকাঝকা ও গাছের ডাল দিয়ে পেটাতে শুরু করেন। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন উপস্থিত হলে গ্রাম পুলিশ দুজনকে হত্যার হুমকি দিয়ে তারা চলে যান। ঘটনার পর থেকে গ্রাম পুলিশ কৃপা ও সুরজিত টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। আর আটক মাদক ব্যবসায়ী বিজন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আলাদাভাবে মামলা করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
আহত কৃপা ও সুরজিত বলেন, ‘পুলিশ মাদক ব্যবসায়ী বিজনকে আটক করে থানায় রওনা দেয়। আমরা পুলিশের পেছনে গেলে হঠাৎ বিএনপি নেতা কিছু লোকজন নিয়ে আমাদের গতিরোধ করে। তারপর বিজনকে কেন পুলিশে ধরিয়ে দিলাম বলে বকাঝকা ও পেটানো শুরু করে। আমরা তাদের বিচার চাই।’
এ বিষয়ে গোপালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জীবেশ বাড়ৈ গ্রাম পুলিশদের পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘গ্রাম পুলিশ দুজন পাটগাতী থেকে এসে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বিজন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে। তখন তাদের পরিচয় জানার পর সঙ্গে থাকা লোকজন কিছু বকা দিয়েছে কিন্তু তাদের পেটানো হয়নি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুই গ্রাম পুলিশকে মারধর, সরকারি কাজে বাধা ও প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় বুধবার রাতে একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।