মা-বাবা-ছেলের ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণা, লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ
ঢাকার হাজারীবাগে সংঘবদ্ধ ফ্ল্যাট বিক্রির প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ভোরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ সুমিলপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা একই পরিবারের সদস্য।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন হানিফ ব্যাপারী (৫৮), তার স্ত্রী শাহানা শিকদার (৪৫) ও ছেলে সামীর (২৩)।
সিআইডি বলছে, প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে একই ফ্ল্যাট বিক্রয়ের কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে আসছিল। তারা প্রথমে ফ্ল্যাটটি বিক্রির প্রস্তাব দিত। পরে বলত, ফ্ল্যাটটি মর্টগেজ রাখা আছে, মালিকের জরুরি টাকার প্রয়োজন, বা দ্রুত টাকা দিলে রেজিস্ট্রি করে দেবে। এভাবে তারা ধাপে ধাপে অগ্রিম টাকা নিত, আবার সময়ক্ষেপণ করে আরও টাকা দাবি করত।
সম্প্রতি চক্রটি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ ও প্রলোভন দেখিয়ে রুপাকে (ছদ্মনাম) ফ্ল্যাট কেনার জন্য আকৃষ্ট করে। পরবর্তীতে রুপা ফ্যাট কেনার আগ্রহ জানালে কৌশলে গত আগস্ট মাসজুড়ে তার কাছ থেকে বায়নানামার মাধ্যমে ৪১ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে রেজিস্ট্রি না দিয়ে তারা গড়িমসি শুরু করে। এরপর গত ২৭ আগস্ট ধানমন্ডিতে অবস্থিত একটি ব্যাংকের সামনে আসামিরা রূপা ও তার সহকারীকে মারধর করে রূপার হাতে থাকা মর্টগেজ টোকেন ছিনিয়ে নেয়।
ঘটনার পর রূপা হাজারীবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তভার গ্রহণের পর সিআইডি ব্যাংক লেনদেন যাচাই, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য বিশ্লেষণ এবং ভুক্তভোগীর বর্ণনার ভিত্তিতে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, চক্রটি একই ফ্ল্যাট দেখিয়ে আগে আরও কয়েকজনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়েছে। এর মধ্যে মো. শাহাদাৎ হোসেনের কাছ থেকে ১২ লাখ, মো. মাহবুবুর রহমানের কাছ থেকে ৯ লাখ ৪০ হাজার এবং মো. নান্নু মিয়া ইমনের কাছ থেকে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা নেওয়ার তথ্য পেয়েছে সিআইডি। তা-ই নয়, সিআইডির তদন্তে দেখা গেছে, চলতি বছরের ২৮ আগস্ট চক্রটি একই ফ্ল্যাট ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকায় রওশন আরা নামে একজন মহিলার কাছে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে।
সিআইডি জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীরা প্রতারণার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। মামলার পূর্ণাঙ্গ রহস্য উদঘাটন এবং চক্রের অন্যান্য সদস্য ও সহযোগীদের শনাক্তের জন্য মামলাটির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।