১২ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৪৬

অপহরণকারীদের দেওয়া তথ্যে ফ্ল্যাট থেকে ক্যামব্রিয়ান কলেজের ছাত্রের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

সুদীপ্ত রায়  © সংগৃহীত

নিখোঁজের চার দিন পর রাজধানীতে সুদীপ্ত রায় (১৭) নামে এক কলেজছাত্রের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে শাহ আলী থানার তুরাগ সিটি এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের ফ্ল্যাট থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

ভাটারা থানা পুলিশ জানায়, নিহত সুদীপ্ত ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হয়েছেন। তিনি বারিধারার ক্যামব্রিয়ান কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন এবং কলেজের হোস্টেলে থাকতেন।

এ ঘটনায় দুজনকে টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের একজন সুদীপ্তর পরিচিত বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তে জানা গেছে, সুদীপ্তকে কৌশলে বাসায় ডেকে নিয়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করেছিলেন ওই দুই যুবক।

ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসমত আলী জানান, গত শুক্রবার বিকেলে সুদীপ্ত নিখোঁজ হন। সেই রাতেই তাঁর পরিবারের কাছে মুঠোফোনে ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আবদুল্লাহ (২২) ও জুনায়েদ দেওয়ান (২২) নামে দুই যুবককে শনাক্ত করে মধুপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেলে তুরাগ সিটির একটি ১০ তলা ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট থেকে সুদীপ্তর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এসআই হাসমত বলেন, গ্রেপ্তার দুজনই ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা ছাত্র, যারা ঢাকায় চাকরির জন্য এসেছিলেন। তারা দিয়াবাড়ির ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। দুজনের মধ্যে আবদুল্লাহর বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে, আর নিহত সুদীপ্তর বাড়িও একই জেলায় হওয়ায় আগে থেকেই তাদের মধ্যে পরিচয় ছিল।

তিনি আরও জানান, শুক্রবার বিকেলে আবদুল্লাহ ফোন করে সুদীপ্তকে ফ্ল্যাটে ডেকে নেন। রাতে কৌশলে তার ফোন নিয়ে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করেন। সকালে ফোন না পেয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে সুদীপ্ত জানতে পারেন, তার বাবার কাছে আগেই মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আবদুল্লাহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুদীপ্তর গলায় আঘাত করেন, পরে পুনরায় আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মরদেহ গুমের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়ে আবদুল্লাহ ও জুনায়েদ ফ্ল্যাট ছেড়ে পালিয়ে যান।

এর আগে গত শনিবার, সুদীপ্তর বাবা হিমাংশু কুমার রায় ভাটারা থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার সূত্র ধরেই হত্যাকারীদের শনাক্ত করে পুলিশ বলে জানিয়েছেন এসআই হাসমত আলী।