বাদীর জিম্মায় জামিন পেলেন ঢাবি ছাত্রদল নেতা শাওন
চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন শাওন জামিন পেয়েছেন। আজ শনিবার (১১ অক্টোবর) মামলার বাদী নাঈম আহমেদের জিম্মায় তাকে জামিন দেয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত ।
পরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আজ মামলার বাদীর জিম্মায় ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন শাওন জামিন পেয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ছাত্রদল নেতা শাওনসহ আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও মারধর করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা দায়ের হয়। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার (১০ অক্টোবর) মোহাম্মদ ইদ্রিস (৪৬) নামে একজনকে আটক করেছে গুলশান থানা পুলিশ। এরপর ছাত্রদল নেতা শাওন ও আটককৃত ইদ্রিসসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শেখ নাঈম আহমেদ।
জানা গেছে, মামলার বাদী নাঈম আহমেদ রাজধানীর পান্থপথ এলাকায় অবস্থিত ট্রিপজায়ান নামক একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক। গতকাল তিনি গুলশান এলাকায় ব্যাবসায়িক কাজের জন্য গিয়ে চাঁদা দাবি, অপহরণ ও মারধরের শিকার হন বলে দাবি তার।
আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্রদল নেতা শাওনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা, মুখ খুলছেন না কেউ
মামলার এজাহারে নাঈম আহমেদ উল্লেখ করেন, ‘আমি ৯ অক্টোবর দুপুর ১টার দিকে ব্যাবসায়িক মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করার জন্য গুলশান-১ এ আসি। পরবর্তীতে আমি আমার মিটিং শেষ করে গুলশান-১ গোল চত্তরের পশ্চিম পাশে ৫১ দক্ষিণ অ্যাভিনিউয়ের নিচ তলায় বিসমিল্লাহ হানিফ বিরিয়ানি অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে খাওয়ার উদ্দেশ্যে যাই। সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় খাওয়া দাওয়া শেষ হলে আসামি নাছির উদ্দিন শাওন আমাকে ফোন করে দুবাইয়ের বিমান টিকিট ক্রয় করবে মর্মে আমার অবস্থান জানতে চায়। আমি শাওনকে আমার অবস্থান জানালে ৫টা ৫৫ মিনিটে মোহাম্মদ ইদ্রিস (৪৬), মোহাম্মদ হেলাল (২৬), নাছির উদ্দিন শাওন (২৮) সহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন আমাকে ঘিরে ধরে জোরপূর্বক খলিফা’স রেস্টুরেন্টে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
নাঈম আহমেদ উল্লেখ করেন, তারা আমার ফোন, ল্যাপটপ, মানিব্যাগ নিয়ে নেয় এবং আমার কাছে নগদ ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তারা আমার মোবাইল ফোনটি নিয়ে আমার ব্যক্তিগত ছবি তারা সংগ্রহ করে। তখন আমার ভাইয়ের ছেলে নাহিদুল ইসলাম খলিফা’স রেস্টুরেন্টে আসলে তারা আমার ল্যাপটপটি আমার ভাতিজা নাহিদুল ইসলামকে দিয়ে দেয়। আমি তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সন্ধ্যা ৭টায় আমাকে গুলশান-০১ লেকপাড়ে নিয়ে যায় এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। তাদের দাবিকৃত নগদ ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা রাত ১০টার মধ্যে দেওয়ার জন্য বলে, অন্যথায় তারা আমাকে হত্যার হুমকি দেয়।
মামলার এজাহারে তিনি আরও বলেন, টাকা দিতে ব্যর্থ হলে রাত পৌনে ১২টার দিকে তারা আমাকে তাদের ব্যবহৃত মটরসাইকেলে উঠিয়ে গুলশান-১ পুলিশ প্লাজার পার্শ্ববর্তী হয়ে হাতিরঝিল সংযোগ সড়কের দিকে নিয়ে যায়। এ সময় আমার ডাক চিৎকার শুনে যৌথ বাহিনীর চেকপোাস্টে আমাকে বহনকৃত মটরসাইকেলটিকে থামালে শাওন আমাকেসহ ১নং আসামি মোহাম্মদ ইদ্রিসকে রেখে অন্য আসামিদের নিয়ে পালিয়ে যায়। যৌথ বাহিনী ইদ্রিসকে (১নং আসামি) ধরে তাদের হেফাজতে নেয় ও আমার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে আমাকে ফেরত দেয়। যৌথবাহিনী তারা তাদের প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে আমাকে ও ইদ্রিসকে গুলশান থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে।